বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার শেষ করতে সময় লেগেছে ৯ মাস। সেমিস্টার কার্যক্রম শেষ হওয়ার দেড় মাসেরও বেশি সময় পেরোলেও এখনও দেওয়া হয়নি ফলাফল।
চলতি বছরের মার্চ মাসে শেষ সেমিস্টার তথা লেভেল-৪, টার্ম-২। সেমিস্টারের শুরুতে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস নিয়ম অনুযায়ী ইন্টার্নশিপ শেষ করে শিক্ষার্থীরা। পরে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ে থিউরি ক্লাস শুরু হয়। এতে দেখা যায় জুন মাসের শেষ সপ্তাহে ক্লাস শেষ হয় সকল বিভাগের। তাদের চূড়ান্ত পরীক্ষা ২০ জুলাই শুরু হয়ে শেষ হয় ৩ সেপ্টেম্বর। পরে কমপ্রিহেনসিভ ভাইবা, প্রজেক্ট প্রেজেন্টেশন এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্ট প্রেজেন্টেশনের শেষ হয় অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে। সেমিস্টার কার্যক্রম শেষ হওয়ার প্রায় দেড় মাস পার হলেও ফলাফলের মুখ দেখেনি শিক্ষার্থীরা।
উক্ত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব হওয়ায় ৪৪তম ব্যাচের অধিকাংশ শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে। তাদের দাবি মাত্র ৩টি লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন ৩ মাসে শেষ করতে পারেনি। অন্যদিকে ভাইভা ও প্রেজেন্টেশনের মূল্যায়ন সঙ্গে সঙ্গে হয়ে থাকে। ফলে আলাদা করে মূল্যায়নের জন্য সময় দরকার হয় না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৪৪তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের ব্যাচের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি মশিউর রহমান স্যারের অবহেলার কারণে ফল প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। ওনার তদারকি এবং ফল প্রকাশে তোড়জোড় না করার কারণে এমনটা হচ্ছে। স্বয়ং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না বলে জানতে পেরেছি।
একই ব্যাচের আহনাফ আবিদ অন্ত নামের আরেক শিক্ষার্থী জানান, নির্দেশনা না মানার প্রবণতা রেজাল্টের দীর্ঘসূত্রিতার জন্য অনেকাংশে দায়ী। এই সময়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা বিভিন্ন সরকারি চাকরিতে ঢুকে যাচ্ছে। অনেকে মাস্টার্স শেষ করে ফেলছে যা আমাদের লজ্জার মধ্যে ফেলে দেয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় ইমেজকে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাই রেজাল্ট ব্যবস্থাপনাকে একটি টাইম ফ্রেমের মধ্যে বেঁধে দেওয়া দরকার। সেইসাথে আমি রেজাল্ট দ্রুত সময়ে প্রকাশ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৪তম ব্যাচের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ড. মশিউর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রেজাউল হক বলেন, সকল শিক্ষক মার্ক দিতে দেরি হওয়ায় এমন হয়। তবে রেজাল্ট তৈরির কাজ চলছে শুরুর। আশা করি, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে রেজাল্ট দেওয়া যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. সাঈদুজ্জামান বলেন, সকল শিক্ষক মার্ক জমা দিয়েছে। ফলাফল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি দু-সপ্তাহের মধ্যে রেজাল্ট দিবে।
উল্লেখ্য, করোনা পরবর্তী সময়ে চার-পাঁচ মাসে সেমিস্টার শেষ করার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি।
মন্তব্য করুন