রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:০৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কোটিপতি হওয়ায় রাগ করে নিজের কোম্পানি দান করে দেন উদ্যোক্তা!

জনপ্রিয় পোশাক ব্র্যান্ড পাটাগোনিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ইভন শুইনার্ড | ছবি : সংগৃহীত
জনপ্রিয় পোশাক ব্র্যান্ড পাটাগোনিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ইভন শুইনার্ড | ছবি : সংগৃহীত

ধনকুবেরদের কথা উঠলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিলাসবহুল ইয়ট, প্রাসাদোপম বাড়ি, দামি পোশাক-আশাক আর রত্নখচিত অলংকার। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের এক উদ্যোক্তার গল্প একেবারেই ভিন্ন। যখন কোটিপতির তালিকায় তার নাম উঠল, তখন তা তার কাছে আনন্দের নয়, বরং বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

অদ্ভুত মানসিকতার এই উদ্যোক্তার নাম ইভন শুইনার্ড। জনপ্রিয় পোশাক ব্র্যান্ড পাটাগোনিয়ার প্রতিষ্ঠাতা তিনি। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িকী ফোর্বস যখন তাকে কোটিপতিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে, তখন ভীষণ রাগ হয় তার। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, মানবকল্যাণে নিজের কোম্পানি দান করে দেবেন।

জানা গেছে, বর্তমানে ওই উদ্যোক্তার বয়স ৮৬। আর্থিক হিসেবে এখন তিনি কোটিপতি নন, কারণ পুরো কোম্পানির মালিকানা দিয়ে দিয়েছেন একটি ট্রাস্ট ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের হাতে। তবে এই সিদ্ধান্তকে কখনো ত্যাগ বলে মনে করেননি শুইনার্ড। বরং মিতব্যয়ী জীবনযাপনই তার কাছে স্বস্তিদায়ক।

শৈশব থেকেই পাহাড়ে চড়াই ছিল তার নেশা। হাতেগোনা কিছু জিনিসপত্র নিয়েই খোলা আকাশের নিচে পার করেছেন বহু বছর। নিজের আত্মজীবনীতে (২০০৫) শুইনার্ড লিখেছিলেন, কত রকম অদ্ভুত কৌশল অবলম্বন করেছিলেন টিকে থাকার জন্য। টাকা বাঁচাতে তিনি অনেক দিন বিড়ালের খাবার খেয়ে কাটিয়েছেন, আবার কখনো কয়লার টুকরো গরম পানিতে মিশিয়ে সেই পানি খেয়েছেন।

১৯৫৭ সালে বন্ধুদের নিয়ে মেক্সিকোর একটি ছোট কুঁড়েঘরে ছিলেন তিনি। তখন দিন কাটত ফল আর মাছ খেয়ে। সামান্য অর্থের জোগান হতো পাহাড়চড়াইয়ের সরঞ্জাম বিক্রি করে। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে জন্ম নেয় পাটাগোনিয়া ব্র্যান্ড (১৯৭৩ সালে)। শুইনার্ডের ভাষায়, ‘সেই সময়ে দিনে খরচ হতো মাত্র ৫০ সেন্ট থেকে এক ডলার।’

তিনি লিখেছিলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বিড়ালের খাবারের ডিব্বা কিনতেন মাত্র ৫ সেন্ট দরে। আর বিশুদ্ধ পানির অভাবে প্রায়ই অসুস্থ থাকতেন। ওষুধ কেনার সাধ্য ছিল না। তাই নোনাজল আর কয়লার মিশ্রণ খেয়েই অসুখ সারাতেন।

এমন জীবনযাপন করা মানুষটির কাছে কোটিপতি হওয়া কোনো সাফল্য ছিল না। বরং তাঁর কাছে এটি ছিল ‘নীতির ব্যর্থতা’। ফোর্বসের তালিকায় নাম উঠতেই তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘এটি আমাকে ভীষণ রাগিয়ে তুলেছিল।’

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কোম্পানি বিক্রি করে দেওয়া কিংবা শেয়ারবাজারে ছেড়ে দেওয়া শুইনার্ডের জন্য কোনো সমাধান ছিল না। কারণ তাতে আরও বেশি অর্থ আসত, যা তিনি চাননি।

অবশেষে ২০২২ সালে তিনি ব্যতিক্রমী এক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। নিজের পুরো কোম্পানির মালিকানা হস্তান্তর করলেন একটি ট্রাস্ট ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের কাছে। অবশ্য ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে নিশ্চিত করা হয়েছে, প্রতিবছর তারা অন্তত ১০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং বন্য পরিবেশ সংরক্ষণে।

সূত্র : জিও নিউজ উর্দু

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার একমাত্র তারেক রহমানের নেতৃত্বেই সম্ভব : সেলিমুজ্জামান 

ট্রাম্পের সঙ্গে ড. ইউনূসের ছবি নিয়ে প্রেস সচিবের স্ট্যাটাস

জোটগতভাবে প্রার্থী তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ গণতন্ত্র মঞ্চের

উর্দুভাষীদের স্থায়ী পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি আমিনুল হকের

কামাল মজুমদারের ছেলে শাহেদ আটক

বিটিসিএলের নতুন ৫ সেবা নিয়ে ব্রেকিং দিলেন ফয়েজ আহমদ

‘মানবাধিকার কমিশনের নামে অমানবিকতার চর্চা এদেশের মানুষ চায় না’

আলভারেজ নৈপুন্যে অ্যাথলেটিকোর মাঠে বিধ্বস্ত রিয়াল

বিইউবিটিতে বিএপিএস ন্যাশনাল প্রোগ্রামিং ক্যাম্প সম্পন্ন

প্রিমিয়ার লিগে সিটির বড় জয়, চেলসি-লিভারপুলের হার

১০

ময়লা ছিটিয়ে পরিষ্কার অভিযান, ভিডিও ভাইরাল

১১

নেছারাবাদে স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

১২

ভ্যাপসা গরমসহ ১২০ ঘণ্টার পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

১৩

শিক্ষার মানোন্নয়নে ইউসিটিসির সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত

১৪

সৌদির কাছে পরমাণু অস্ত্র বিক্রি করছে পাকিস্তান?

১৫

বরিশাল বিভাগে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত, হটস্পট বরগুনা

১৬

তিন উপজেলার ৪৬ পূজামণ্ডপে খালেদা জিয়ার অনুদান

১৭

ভারতের কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া বাংলাদেশের

১৮

মনিরামপুরে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন

১৯

নিজেদেরই এক অঙ্গরাজ্যে সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প

২০
X