সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণ বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা উন্নয়ন জোট ও ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টায় রাজধানীর আগারগাঁও পরিবেশ অধিদপ্তরের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসে সেন্টমার্টিনে কোনো পর্যটক রাতযাপন করতে পারবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দিনে ২০০০ পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন এবং রাতযাপন করতে পারবেন। ফেব্রুয়ারি মাসে সেন্টমার্টিনে সরকার পর্যটক যাতায়াত বন্ধ রাখবে এতে পর্যটনশিল্প ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সাধারণ উদ্যোক্তারা সর্বস্বান্ত হয়ে পরবে।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে টোয়াবের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, আমাদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও সেন্টমার্টিনে রাতযাপন নিষিদ্ধ ও পর্যটন মৌসুম এবং পর্যটক যাতায়াত সীমিত করার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বাস করে। এরা সবাই পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। সেন্টমার্টিনে পর্যটন সীমিত করা হলে অথবা বন্ধ করা হলে এরা সবাই বেকার হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে উদ্যোক্তাদের আর্থিক বিনিয়োগ মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে। ফলে তিনি সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই এবং আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পর্যটকদের জন্য সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমনকে নির্বিঘ্ন ঘোষণা করার জোরালো দাবি জানান তারা।
তিনি আরও বলেন, আমরা সেন্টমার্টিনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে চাই, তবে পর্যটন বন্ধ করে দিয়ে নয়। বরং পরিবেশের অনুকূলে সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তিনি বলেন আগামী দুই দিনের মধ্যে দাবি আদায় না হলে রাজপথে কঠোর কর্মসূচি প্রদান করা হবে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের চেয়্যারম্যান শিবলুল আজম কোরেশি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করে রাতযাপনসহ যাবতীয় বিধিনিষেধ ব্যতিরেকে পর্যটন চালু রাখা এবং টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে বিকল্প পথ তৈরি করতে হবে।
তিনি দাবি করেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশসহ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পর্যটনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করে পর্যটন উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। দ্বীপে লোনা পানি মিঠা পানিতে পরিণত করার নিমিত্তে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করতে হবে। পচনশীল বর্জ্য ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে বায়োগ্যাসে পরিণত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দ্বীপে জেনারেটর ব্যবহার বন্ধ করে পরিবেশবান্ধব সোলার প্লান্ট স্থাপন করতে হবে এবং ইট, বালু, সিমেন্ট, রড ব্যবহার করে স্থায়ী স্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
মানববন্দনে আরও বক্তব্য রাখেন- প্রচার সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান ও ই-ট্যাব সভাপতি ইমরানুল আলম, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)-এর নেতা, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের নেতৃবৃন্দ, সেন্টমার্টিন'স দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের নেতৃবৃন্দ, ই-ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ট্যাব)-এর নেতৃবৃন্দ, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা, সেন্টমার্টিন হোটেল মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সেন্টমার্টিন, সেন্টমার্টিন দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বোট মালিক সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দ, মৎসজীবী মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ স্লিপার এসি বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি-ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কুয়াব)-এর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন