প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মধ্যে বাড়ছে অনলাইন নির্ভরতা। বর্তমানে নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে বিনোদন ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় আগের চেয়ে বাড়ছে অনলাইন মাধ্যমের ব্যবহার। এর মধ্যেই ভোক্তাদের জন্য দুঃসংবাদ নিয়ে এসেছে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট। এবারে অনলাইন কেনাকাটার বিক্রয় কমিশনের ওপর তিনগুণ ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। নতুন করে কর আরোপ করা হয়েছে ডিজিটাল বিনোদনেও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন পদক্ষেপে ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল বৈষম্যও বাড়বে।
নতুন অর্থবছরের জন্য সোমবার (২ জুন) বেলা ৩টায় বাজেট উপস্থাপন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এ সময় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন।
নতুন ঘোষিত বাজেটে অনলাইন পণ্য বিক্রির কমিশনের ওপর ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্মের ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
দারাজ বাংলাদেশের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এএইচএম হাসিনুল কুদ্দুস রুশো কালবেলাকে বলেন, নতুন ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রস্তাবনার ফলে ই-কমার্স ব্যবসায় খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে, যা উদ্যোক্তা ও ভোক্তা উভয়ের ওপরই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এর ফলে ই-কমার্স খাতের প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার দিকে আমাদের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করবে।
ওটিটি প্লাটফর্ম টফি পরিচালনাকারী মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক জানায়, ওটিটি পরিষেবার ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব আমাদের জন্য উদ্বেগজনক। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে নিম্নআয়ের মানুষ ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীসহ দেশের কোটি মানুষের জন্য ডিজিটাল বিনোদন ও তথ্যসেবা আরও ব্যয়বহুল হবে। এতে সাধারণ মানুষের কনটেন্ট দেখার স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে এবং ডিজিটাল বৈষম্য আরও বাড়বে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ফাহিম মাশরুর কালবেলাকে বলেন, ই-কমার্স প্লাটফর্মের ওপর অতিরিক্ত ভ্যাট অনলাইনে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে তুলবে। যা অনলাইন ব্যবসাকে নিরুৎসাহিত করতে পারে। ওটিটি প্লাটফর্মের ওপর সম্পূরক শুল্কের কারণে দেশিয় ওটিটিগুলো গ্রাহক হারাতে পারে, যার সুবিধা পাবে নেটফ্লিক্স বা বিদেশি অন্যান্য ওটিটি প্লাটফর্মগুলো।
মন্তব্য করুন