বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উত্তেজনাপূর্ণ আবহে গত বছরের ৫ আগস্ট প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনের কিছু অংশে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতি সংঘটিত হয়। ওই বাসভবনের সেদিনের বাস্তবতা ও প্রেক্ষাপট দলিলবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে একটি তথ্যনির্ভর ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রস্তুত করা হয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এ ঘটনার প্রামাণ্য উপস্থাপন নিশ্চিত করতে এবং জাতীয় স্মৃতি-ভাণ্ডারে তা সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ভিডিও ডকুমেন্টারিটি ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’-এ পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে’ ভিডিও ডকুমেন্টারিটি পাঠান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিমকোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক বিকাশ ও রাজনৈতিক চেতনার ধারায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ হিসেবে বিবেচিত। সেদিন ছাত্রসমাজ ও সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আংশগ্রহণে দেশব্যাপী গণআন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। আন্দোলনের তীব্রতা রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিচারব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনও তখনকার উত্তাল পরিস্থিতির বাইরে থাকেনি। এদিন ছাত্রসমাজ ও সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে দেশব্যাপী যে গণআন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে, তা নিছক একটি রাজনৈতিক ঘটনা নয়; বরং তা ছিল জনগণের গভীর প্রত্যাশা, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার দাবিকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত একটি ঐক্যবদ্ধ জনসঞ্চার।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আন্দোলনের উত্তেজনাপূর্ণ আবহে বাসভবনের কিছু অংশে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতি সংঘটিত হয়। প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনের সেদিনের বাস্তবতা ও প্রেক্ষাপট দলিলবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে একটি তথ্যনির্ভর ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রস্তুত করা হয়। এ ডকুমেন্টারিটি কেবল একটি ঘটনার চিত্রায়ন নয়, বরং সময়ের প্রেক্ষিতে গণচেতনাকে ধারণকারী ইতিহাসের এক জীবন্ত অধ্যায়। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বিশ্বাস করে, আন্দোলনের উত্তেজনাপূর্ণ আবহে প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনের কিছু অংশে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতি সংঘটিত হয়েছে তাকে বিচ্ছিন্নভাবে না দেখে, সংশ্লিষ্ট সময়ের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট এবং জনগণের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভুত অসন্তোষ ও প্রত্যাশার বাস্তব প্রতিফলন হিসেবে বিবেচনা করা অধিক যুক্তিযুক্ত।
তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্তের কাছে এ ঘটনার প্রামাণ্য উপস্থাপন নিশ্চিত করতে এবং জাতীয় স্মৃতি-ভান্ডারে তা সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ওই ভিডিও ডকুমেন্টারিটি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বুধবার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’-এ পাঠিয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আশা প্রকাশ করে, জাদুঘর কর্তৃপক্ষ এই গুরুত্বপূর্ণ দলিলটিকে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, যা ইতিহাস সচেতনতা ও নাগরিক দায়িত্ববোধ বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
মন্তব্য করুন