সর্ব মিত্র চাকমা। ব্যালট নং ১৯৭। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সদস্য পদে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্যানেল থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের পর থেকে নানান মহল থেকে হুমকি ধমকি থেকে শুরু করে জমি জায়গা দখল এমনকী পেয়েছেন সমাজচ্যুতির হুমকিও। তারপরও বিন্দুমাত্র দমে যাননি তিনি। সিদ্ধান্তে অবিচল থেকেছেন, ঘোষণা দিয়েছেন, ‘আমরা থামব না।’
একদিন বাদেই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ডাকসুর ভোটগ্রহণ। প্রায় ৪০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। রোববার রাত ১১টা পর্যন্ত ছিল নির্বাচনী প্রচারণার শেষ সময়।
মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে সর্ব মিত্র চাকমা তুলে ধরেছেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও প্রচার প্রচারণা চলাকালের তিক্ত-মিষ্ট অভিজ্ঞতা।
সর্ব মিত্র চাকমার সেই স্ট্যাটাসটি কালবেলার পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
তিনি লিখেছেন, ‘আজ ছিল নির্বাচনী প্রচারণার শেষদিন, আমার কিছু কথা...। ১৮ আগস্ট ২০২৫, দিনটা আমার জীবনে একটা টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে স্মরণে থাকবে। আমার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক জীবন প্রচণ্ডভাবে প্রভাবিত হয়েছে আমার এই দুঃসাহসিক সিদ্ধান্তে। রীতিমতো হত্যার হুমকি, জায়গা জমি দখলের হুমকি, সমাজচ্যুত, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের জটিলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আমাকে, আর আমার পরিবারকে এ কয় দিনে।
আমাকে যে হাসিখুশি-প্রাণবন্ত দেখেছেন এ তিনটা সপ্তাহ, আমি আদতে ভেতরে এমনটা ছিলাম না। আমি বিশ্বাস করি, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে আমার হাসিটাই যথেষ্ট। আমি যেমনই থাকি, আমার হাসিটাকে বাঁচিয়ে রাখতেই হবে।
আমি যখন আমার সিনিয়র, জুনিয়র, ব্যাচমেটদের দ্বারে দ্বারে গেছি, সবাই সাহস জুগিয়েছেন, ‘ভয় নেই, আমরা তো আছি’ এ সময়ে এ কথাটা আমার কাছে কোটি টাকার চেয়ে দামি ছিল। বিশেষ করে ২৪-২৫ ব্যাচের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ, তারা আমাকে দেখা মাত্রই ছুটে আসে, চমৎকার হাসি দিয়ে কথা বলে।
যাদের কাছে আমি পৌঁছাতে পেরেছি, আমি পরামর্শ শুনতে চেয়েছি, অনেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের জমে থাকা সমস্যার কথাগুলো শেয়ার করেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন। নির্বাচন স্রেফ একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র, আমাদের সংগ্রাম জারি থাকবে!
আমার যাত্রা থেমে না যাক, আমি ছুটতে পছন্দ করি, ছুটে চলব যতদিন আছি।’
মন্তব্য করুন