

আগামী বছরের ফুটবল বিশ্বকাপ হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আসর—প্রথমবারের মতো অংশ নেবে ৪৮টি দল। ইতোমধ্যেই ২৮টি দেশ জায়গা নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে। তবে এখনো বাকি রয়েছে ২০টি আসন, যা নির্ধারিত হবে আগামী নভেম্বর ও মার্চের আন্তর্জাতিক বিরতিতে।
আগামী সাত মাসের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে সব দল। চলতি মাসেই ১৪টি দল নিশ্চিত করবে বিশ্বকাপের টিকিট, আর ইউরোপ থেকে বাকি চার দল নির্ধারিত হবে মার্চে। মার্চের মধ্যেই হবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফ, যেখানে অংশ নেবে ছয়টি দেশ। শেষ পর্যন্ত সেই প্লে-অফ থেকেই উঠে আসবে দুই নতুন দল—যারা পূর্ণ করবে ৪৮ দলের কোটা।
ইউরোপ
ইউরোপের জন্য বরাদ্দ ১৬টি জায়গার মধ্যে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করেছে কেবল ইংল্যান্ড। বাকি ১১ গ্রুপের শীর্ষ দল সরাসরি বিশ্বকাপে যাবে, আর রানার্সআপ দলগুলো মার্চে প্লে-অফ খেলবে। তাদের সঙ্গে যোগ দেবে নেশনস লিগ থেকে সেরা চারটি দল—বর্তমানে ওয়েলস, রোমানিয়া, সুইডেন ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড সেই জায়গায় রয়েছে।
এই ১৬ দল চারটি পথে ভাগ হয়ে এক ম্যাচের সেমিফাইনাল ও ফাইনালে মুখোমুখি হবে। বিজয়ী চার দেশই পাবে বিশ্বকাপের টিকিট।
আফ্রিকা
আফ্রিকা অঞ্চলে (CAF) ইতোমধ্যে আলজেরিয়া, কেপ ভার্দে, আইভরি কোস্ট, মিশর, ঘানা, মরক্কো, সেনেগাল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তিউনিসিয়া নিশ্চিত করেছে মূল পর্ব। এখন বাকি একটি প্লে-অফের সুযোগের জন্য লড়বে নাইজেরিয়া, গ্যাবন, কঙ্গো ও ক্যামেরুন। রাবাতে অনুষ্ঠিত হবে এই সেমিফাইনাল ও ফাইনাল পর্বের ম্যাচগুলো, যার বিজয়ী যাবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফে।
এশিয়া
এশিয়া থেকে আট দল ইতোমধ্যে নিশ্চিত করেছে বিশ্বকাপের টিকিট—জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব, কাতার, উজবেকিস্তান ও জর্ডান। বাকি এক আসনের জন্য এখন মুখোমুখি হবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরাক। এই দুই লেগের প্লে-অফের জয়ী দল এশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফে।
কনকাকাফ
উত্তর আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে (CONCACAF) স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো ছাড়াও আরও তিনটি স্বয়ংক্রিয় জায়গা বাকি রয়েছে। নভেম্বরের ম্যাচগুলোর পর সুরিনাম, জামাইকা ও হন্ডুরাসের যোগ্যতা অর্জনের সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। বাকি দুই সেরা রানার্সআপ দল পাবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফে খেলার সুযোগ।
দক্ষিণ আমেরিকা ও ওশেনিয়া
দক্ষিণ আমেরিকা (CONMEBOL) অঞ্চলের ছয় দল—আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, উরুগুয়ে, ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে ও ইকুয়েডর—এরই মধ্যে টিকিট নিশ্চিত করেছে। সপ্তম স্থানে থাকা বলিভিয়া যাবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফে।
অন্যদিকে, ওশেনিয়া (OFC) অঞ্চলের নিউ জিল্যান্ড প্রথমবারের মতো স্বয়ংক্রিয়ভাবে যোগ্যতা পেয়েছে, আর রানার্সআপ নিউ ক্যালেডোনিয়া যাবে প্লে-অফে।
আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফ: শেষ দুই টিকিটের যুদ্ধ
মার্চে অনুষ্ঠিত হবে প্লে-অফের চূড়ান্ত লড়াই। এখানে অংশ নেবে বলিভিয়া, নিউ ক্যালেডোনিয়া এবং এশিয়া, আফ্রিকা ও কনকাকাফের তিন প্রতিনিধি। দুই সেরা র্যাঙ্কধারী দল সরাসরি ফাইনালে যাবে, আর বাকি চার দল খেলবে সেমিফাইনাল। সব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে উত্তর আমেরিকায়, আর সেখান থেকেই নির্ধারিত হবে বিশ্বকাপের শেষ দুই দল।
ফিফা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আসরটি শুরু হবে ২০২৬ সালের জুনে। তিন মহাদেশজুড়ে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে অংশ নেবে ৪৮ দেশ—যার অনেকগুলোর জন্যই এটি হবে এক নতুন বিশ্বযাত্রার সূচনা।
মন্তব্য করুন