কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

তীব্র মানবিক সংকটে মিয়ানমার, খালি হাতে উদ্ধার অভিযান

ভূমিকম্পের পর দুই দিন পার হলেও ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধার কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে। ছবি : সংগৃহীত
ভূমিকম্পের পর দুই দিন পার হলেও ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধার কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে। ছবি : সংগৃহীত

মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পের তাণ্ডবের দুই দিন পেরিয়ে গেছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ মার্চ) ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে মিয়ানমারে ১,৬০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর দেশটি তীব্র মানবিক সংকটের মুখে পড়েছে। ভূমিকম্পের পর পরই দেশটির রেড ক্রস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ত্রাণ সহায়তার প্রয়োজন প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে।

এই ভূমিকম্পটি ছিল মিয়ানমারে শতাব্দীর অন্যতম শক্তিশালী কম্পন, যা সেতু, মহাসড়ক, বিমানবন্দর এবং রেলপথসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি দীর্ঘকাল ধরে গৃহযুদ্ধের মধ্যে রয়েছে, ফলে ভূমিকম্পের পর উদ্ধার প্রচেষ্টা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।

আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট ফেডারেশনের (আইএফআরসি) এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক আলেকজান্ডার ম্যাথিউ এক বিবৃতিতে বলেছেন, এটি কেবল একটি দুর্যোগ নয়, এটি একটি জটিল মানবিক সংকট, যা পূর্ববর্তী দুর্বলতাগুলোর ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করেছে। খবর রয়টার্স।

ভূমিকম্পের পর স্থানীয় সময় রোববার, বিদেশি উদ্ধারকারী দলগুলো মিয়ানমারে পৌঁছেছে, যাতে দেশের ত্রাণ এবং উদ্ধারকাজে সহায়তা করা যায়। মিয়ানমার রেড ক্রস জানায়, স্বেচ্ছাসেবকরা প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করছে এবং জরুরি সহায়তা হিসেবে কম্বল, ত্রিপল ও স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ করছে।

আইএফআরসি প্রায় ১১৩.৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরুরি তহবিল সংগ্রহের আবেদন জানিয়েছে, যাতে ১ লাখ মানুষের জীবন রক্ষাকারী সহায়তা ও প্রাথমিক পুনরুদ্ধার সহায়তা প্রদান করা যায়।

তবে, ভূমিকম্পের পর দুটি দিন পার হলেও উদ্ধার কাজ এখনো কঠিন। অধিকাংশ উদ্ধারকর্মীকে খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ সরাতে হচ্ছে। ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধারকাজের গতি মন্থর হয়ে পড়েছে এবং মিয়ানমারের যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থা এ ধরনের বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করার মতো সক্ষমতা দিতে পারেনি।

ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চল, যার কাছাকাছি প্রাচীন শহর মান্দালয় অবস্থিত। শহরটির প্রায় ১৫ লাখ বাসিন্দা রয়েছে এবং এখানে অনেক ঐতিহাসিক মন্দির ও প্রাসাদও রয়েছে।

মান্দালয়ে একটি ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া পরিবারের সদস্যদের উদ্ধারের জন্য খালি হাতে কাজ করছেন ২৫ বছর বয়সী হতেত মিন। তিনি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সেখানে অনেক ধ্বংসস্তূপ পড়েছে। কোনো উদ্ধারকারী দল এখানে আসেনি।

এক উদ্ধারকর্মী জানান, আমরা ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ১৪০ বৌদ্ধভিক্ষুকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি, তবে আমাদের কাছে যথেষ্ট লোকবল এবং যন্ত্রপাতি নেই। কিন্তু আমরা কাজ বন্ধ করব না।

এই অবস্থায়, চীন, ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ প্রতিবেশী দেশগুলো উদ্ধার কার্যক্রমে সহায়তা করতে মিয়ানমারে উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে, যাতে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা যায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দাম কমলো ইন্টারনেটের

ইসরায়েলে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থা কতটা উপযোগী, ভাবার অনুরোধ তারেক রহমানের

বৈষম্যবিরোধী নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ

জুলাই নিয়ে পুলিশ সদস্যের ‘আপত্তিকর’ পোস্ট, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

শাহজালালে বোয়িং বিমানে লাগেজ ট্রলির আঘাত

আখতারকে রংপুর-৪ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

মধ্যরাতে বরখাস্ত চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার

‘একসঙ্গে সমুদ্রে নেমে তো গোসল করতে পারব না’

জুলাই যোদ্ধার তালিকায় এক ব্যক্তির নাম ২ জায়গায়

১০

বিএনপির অনুষ্ঠানে অপ্রীতিকর ঘটনায় মির্জা ফখরুলের প্রতিবাদ

১১

রাজধানীতে শ্রমজীবী মানুষের মাঝে লায়ন্স ক্লাবের খাবার বিতরণ

১২

জামায়াত-গণঅধিকার পরিষদের মতবিনিময় / নির্বাচনী জোট গঠনে একমত

১৩

উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, মাদ্রাসার সুপার কারাগারে

১৪

তারেক রহমান নেতৃত্ব না দিলে জুলাই আন্দোলন সফল হতো না : মুরাদ

১৫

চট্টগ্রাম নগরীতে ইউপিডিএফ সদস্য গ্রেপ্তার

১৬

‘প্রেমে ব্যর্থ হলে বাথরুম পরিষ্কার করি’

১৭

মেয়ের জন্য চিপস আনতে গিয়ে প্রাণ হারান মোবারক

১৮

১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় সংকটে মার্কিন ডলার

১৯

তারেক রহমান জুলাই বিপ্লবের মূল নেতৃত্বে ছিলেন : অধ্যাপক মোর্শেদ

২০
X