

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে একটি অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় দুটি বাড়ি থেকে প্রায় তিন হাজার কেজি বিস্ফোরণ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে নয়াদিল্লি। এতে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত দুই ডজন মানুষ।
সোমবার (১০ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার রাতে রাজধানী দিল্লি ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে। ঐতিহাসিক লাল কেল্লার গেট নম্বর ১-এর কাছে মেট্রো স্টেশনের বাইরে একটি গাড়িতে এ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অন্তত ১৩ জন নিহত এবং ২৪ জন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের পর আশপাশের কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে একটি ভ্যানের দরজা উড়ে গেছে। এছাড়া আরেকটি গাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। এমনকি রাস্তায় দেহের অংশ ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
দিল্লি পুলিশের কমিশনার সতীশ গোলচা জানান, আজ সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে সিগনালে থেমে থাকা একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশের আরও কয়েকটি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় কিছু মানুষ নিহত হয়েছেন এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তিনি জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
এনডিটিভি জানিয়েছে, বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ এখনো পরিষ্কার নয়। এ ঘটনার পর দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানসহ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ইন্দো-নেপাল সীমান্তেও বিএসএফ এবং গোয়েন্দা বিভাগ নজরদারি শুরু করেছে।
এতে বলা হয়েছে, আহতদের চিকিৎসা দেওয়া ও এলাকা নিরাপদ করাই এখন প্রধান লক্ষ্য। ঘটনাস্থলে প্রায় দুই ডজন অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ফরেনসিক ও প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞরাও ঘটনার তদন্ত করবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে জম্মু ও কাশ্মীর অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ সময়ে ফারিদাবাদ এলাকার দুটি বাড়ি থেকে প্রায় ৩,০০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হয়। উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে প্রায় ৩৫০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, যা সার হিসেবে ব্যবহৃত হলেও তা দিয়ে প্রাণঘাতী বোমা তৈরি করা সম্ভব।
জম্মু কাশ্মীরের চিকিৎসক আদিল রাঠারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়। তাকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার তদন্তে মুজাম্মিল শাকিল নামে আরও এক চিকিৎসকের নাম উঠে আসে। তিনি ফারিদাবাদের আল ফালাহ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে তার দুটি বাড়ি থেকে ১২টি স্যুটকেস ভর্তি বিস্ফোরক, ডিটোনেটর ও টাইমার উদ্ধার করেছে।
এ ঘটনায় আরও এক নারী চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর তার গাড়ি থেকে অ্যাসল্ট রাইফেল ও গুলি উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া আদিল রাঠার সাবেক কর্মস্থল থেকেও একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনাগুলোর পেছনে একটি আন্তঃরাজ্য ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী চক্র সক্রিয় রয়েছে। এর সঙ্গে পাকিস্তানভিত্তিক জইশ-ই-মোহাম্মদ এবং আনসার গজওয়াত-উল-হিন্দের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
মন্তব্য করুন