ইতিহাস মানেই যেন যুদ্ধ, রাজনীতি আর নিষ্ঠুর একনায়কদের গল্প। সাধারণত এসব ভয়ংকর চরিত্রদের বেশিরভাগই পুরুষ—হিটলার, স্ট্যালিন বা নেরন—সব নামই আমাদের চেনা। কিন্তু নারীরা কি কেউ ভয়ংকর হয়ে ওঠা থেকে নিজেদের ছাড় দিয়েছেন? মোটেও না!
নারীরা কেবল প্রেম, ভালোবাসা আর ত্যাগের গল্পেই সীমাবদ্ধ নন। ইতিহাসে এমন কিছু নারী আছেন, যাদের নিষ্ঠুরতা ও অপরাধ দেখে যে কেউ আঁতকে উঠবে।
আজ ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর ছয়জন নারী অপরাধী সম্পর্কেই জেনে নিই চলুন।
আপনি যদি Monster সিনেমাটা দেখে থাকেন, তাহলে এই নামটা হয়তো মনে আছে। আইলিন ছিলেন একজন হাইওয়ে প্রস্টিটিউট, যিনি সাতজন পুরুষকে হত্যা ও লুটপাটের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন।
তিনি বলেছিলেন, সবই নাকি আত্মরক্ষার্থে করেছেন। কিন্তু আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং ২০০২ সালে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
এই নারী অপরাধী ছিলেন তার স্বামীর সহচর। তারা একসঙ্গে তিন নারীকে হত্যা করেন—এর মধ্যে একজন ছিল কারলার নিজের ছোট বোন!
তিনি পুলিশের সঙ্গে একটা চুক্তি করেন এবং বলেন যে, তাকে জোর করে এসব করানো হয়েছে। তাই তিনি মাত্র ১২ বছর জেল খাটেন। পরে ভিডিও প্রমাণে দেখা যায়, তিনি স্বেচ্ছায় এসব অপরাধে অংশ নিয়েছিলেন।
ভিক্টোরিয়ান যুগে ‘বেবি ফার্মিং’ নামে একটা নিষ্ঠুর প্রথা চালু ছিল। যেখানে অবিবাহিত মায়েরা টাকার বিনিময়ে সন্তানদের লালনপালনের জন্য অন্যদের হাতে তুলে দিতেন।
অ্যামেলিয়া এই সুযোগে প্রায় ৪০০টি শিশু হত্যা করেন! তিনি শিশুদের নিয়ে টাকা নিতেন এবং পরে তাদের থেমস নদীতে ফেলে দিতেন। এই নারকীয় কাজের জন্য তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
‘ব্লাডি মেরি’ শুনলে অনেকেই একটা ককটেলের কথা ভাবেন। কিন্তু এর পেছনে রয়েছে এক ভয়ংকর নারীর গল্প।
মেরি প্রথম (Mary I) ছিলেন ইংল্যান্ডের রানী। তিনি চেয়েছিলেন ইংল্যান্ডে আবার ক্যাথলিক ধর্ম ফিরিয়ে আনতে। আর এই উদ্দেশ্যে তিনি প্রায় ৩০০ জন প্রোটেস্টান্টকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেন। তার এই বর্বরতা তাকে এনে দেয় ‘Bloddy Mary’ খেতাব, যদিও তাকে কখনো শাস্তি দেওয়া হয়নি।
১৯৬০-এর দশকে ব্রিটেনে পাঁচজন শিশুকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যা করেছিলেন মাইরা ও তার সঙ্গী ইয়ান ব্র্যাডি।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি নিজের দোষ স্বীকার না করে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে নির্দোষ দাবি করে যান। অবশেষে ১৯৮৭ সালে স্বীকার করেন যে, তিনি মুর হত্যাকাণ্ডে (Moors Murders) যুক্ত ছিলেন।
ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর নারী সিরিয়াল কিলার—এই খেতাব রয়েছে হাঙ্গেরির কাউন্টেস এলিজাবেথ বাথোরির নামে। তিনি প্রায় ৬৫০ তরুণীকে নির্যাতন, ক্ষতবিক্ষত এবং হত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে!
তিনি এতটাই প্রভাবশালী ছিলেন যে, তার বিরুদ্ধে প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কখনো আদালতে ওঠানোই হয়নি। লোককথা অনুযায়ী, তিনি নাকি নিজের সৌন্দর্য ধরে রাখতে মেয়েদের রক্তে গোসল করতেন!
সূত্র: হার হেল্থ
মন্তব্য করুন