কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৮:১১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গাজায় নৃশংসতার প্রতিবাদে ইসরায়েলি পুরস্কার প্রত্যাখ্যান পাকিস্তানি স্থপতির

পাকিস্তানি স্থপতি ও সংরক্ষণবিদ ইয়াসমিন লারি। ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানি স্থপতি ও সংরক্ষণবিদ ইয়াসমিন লারি। ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল অব্যাহতভাবে নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, যা বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় তুলেছে। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান এই বর্বরতার প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পাকিস্তানি স্থপতি ও সংরক্ষণবিদ ইয়াসমিন লারি দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছেন।

পাকিস্তানি স্থপতি এই বছরের ইসরায়েলের উলফ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে মানবতার পাশে দাঁড়ানোর অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রসঙ্গত, ইসরায়েলে ১৯৭৮ সালে প্রবর্তিত উলফ পুরস্কার বিজ্ঞানী ও শিল্পীদের অসামান্য কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে দেওয়া হয়। পুরস্কারের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল ‘বিভিন্ন জাতির) মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক’ গড়ে তোলা।

তবে গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞের মধ্যে ইসরায়েলের দেওয়া কোনো সম্মাননা গ্রহণ করা অনৈতিক বলে মনে করেন ইয়াসমিন লারি।

প্রতিবেদনে তিনি বলেন, আমাকে এটা করতেই হতো। আমার কোনো বিকল্প ছিল না। আমাকে করতেই হতো। নাহলে আমরা আর কী করতে পারি? আমাদের হাত বাঁধা। আমরা এখানে বসে আছি… ওদের (মধ্যপ্রাচ্যের মানুষদের) থেকে অনেক, অনেক দূরে।

তাই আমি মনে করি, একজনকে অবশ্যই জানাতে হবে তার অবস্থান কোথায়।

উল্লেখ্য, ইয়াসমিন লারি পাকিস্তানে নিবন্ধিত প্রথম নারী স্থপতি। তিনি শুধু নান্দনিক স্থাপত্যের জন্যই নয়, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে তার অসাধারণ কাজের জন্যও বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত।

তিনি বলেন, আমি গরিবদের জন্য কাজ করি। কয়েক বছর আগে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের বন্যাকবলিত মানুষদের জন্য তিনি হাজারো স্বল্প খরচের এক কক্ষবিশিষ্ট ঘর নির্মাণে সহায়তা করেছিলেন।

ইয়াসমিন লারি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ২০২৩ সালের রয়্যাল গোল্ড মেডেল ফর আর্কিটেকচার, যা ব্রিটেনের রাজা রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টসের সুপারিশ প্রদান করেন। ২০২০ সালে জেন ড্রু পুরস্কার, যা আধুনিক স্থাপত্যে নারীদের অসামান্য অবদানের জন্য প্রদান করা হয়।

ইয়াসমিন লারি শুধু স্থাপত্যের ক্ষেত্রেই নয়, করাচির ঐতিহ্য সংরক্ষণেও অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৯৬ সালে তার লেখা ‘দ্য ডুয়াল সিটি : করাচি ডিউরিং দ্য রাজ’ বইটি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়। বইটিতে তিনি করাচির ঔপনিবেশিক ইতিহাস, স্থাপত্য এবং জনগোষ্ঠী নিয়ে আলোচনা করেছেন।

তিনি পাকিস্তানের প্রথমদিকের সংরক্ষণবিদদের একজন, যিনি করাচির উপকূলীয় ঐতিহ্য রক্ষার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন।

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিবাদের ধরন ক্রমেই পরিবর্তিত হচ্ছে। ইয়াসমিন লারির মতো একজন বিশ্বমানের স্থপতির পুরস্কার প্রত্যাখ্যান বিশ্বব্যাপী আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তার এই সিদ্ধান্ত শুধু ব্যক্তিগত নৈতিক অবস্থান নয়, বরং বিশ্ববিবেককে গাজার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বানও বটে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শীতে চুলের যত্নে যা করবেন

ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে উৎপাদনে যাচ্ছে জিলবাংলা চিনি কল

প্রবাসীদের জন্য কঠোর সিদ্ধান্ত কুয়েতের, ডিসেম্বরে কার্যকর

‘সুগার ড্যাডি’ চক্র বন্ধ চেয়ে আইনি নোটিশ

আপনারা সবটুকু জেনে সত্যটাই প্রকাশ করবেন: তানজিন তিশা

শাহজাহান চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের

ধানের শীষ মানুষের আস্থার প্রতীক : জালাল উদ্দিন

শীতের সকাল বা সন্ধ্যায় গরম গরম সুপ সারাবে ঠান্ডা ও গলার ব্যথা

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর কামড়ে কান ছিঁড়ে নিল শিশুর, মালিক গ্রেপ্তার

১০

উপদেষ্টা পরিষদে গণভোট অধ্যাদেশ পাস

১১

বৈশাখের বরুণ ফুটেছে অগ্রহায়ণে, বিলাচ্ছে মুগ্ধতা

১২

সাগরে আরেকটি লঘুচাপ, কমবে তাপমাত্রা

১৩

অন্যদের কাছে সম্মান পেতে যা করা জরুরি

১৪

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড শিখবে কবে?

১৫

মেট্রোরেল কার্ডের অনলাইন রিচার্জের উদ্বোধন 

১৬

পঞ্চগড়ে ২ হাজার বস্তা সার জব্দ

১৭

উয়েফার বিরুদ্ধে সুপার লিগের ‘হাজার কোটি টাকার’ মামলা শুরু

১৮

দিবা-রাত্রির টেস্টের আগে অজি শিবিরে সুখবর

১৯

কমনওয়েলথ দাবা প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের সাফল্য

২০
X