এআর-১৫ মডেলের সেমি-অটোমেটিক রাইফেল ব্যবহার করে গুলি করা হয়েছিল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এর আগেও দেশটিতে ভয়াবহ কিছু হামলায় অ্যাসল্ট রাইফেলের ব্যবহার দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এত এত অস্ত্র থাকতে ঠিক এই মডেলের রাইফেলই কেন ব্যবহার করিছিলেন হামলাকারী?
কারণ, এই অস্ত্র দিয়ে একটানা একাধিক গুলি ছোড়া যায়। যার গতিও অনেক বেশি। যা সাধারণ পিস্তলের গুলির চেয়ে তিন গুণ গতিতে ছুটতে পারে। আঘাত হানতে পারে অনেক দূর থেকেও। আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বক ও শরীরের ভেতরে ঘটে ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া।
যুক্তরাষ্ট্রে এআর–১৫ কেনা বেশ সহজ। অঙ্গরাজ্যভেদে কোনো নাগরিক রাইফেলের দোকানে গিয়ে বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে রাইফেল বা শটগান কিনতে পারেন। তবে এর আগে তাকে একটি যাচাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
যাচাই প্রক্রিয়ায় অস্ত্রের ক্রেতা আগে কোনো অপরাধ করেছেন কি না, বা মানসিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হয়। তবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেনাবেচার ক্ষেত্রে অনেক সময় এই যাচাই করা হয় না।
আমেরিকায় বেসামরিক পর্যায়ে রাইফেল বিক্রির পক্ষে কাজ করা সংগঠন এনআরএ জানিয়েছে— এই রাইফেলগুলো নিশানা পরীক্ষা ও নিজেদের প্রতিরক্ষার কাজে ব্যবহার করেন ক্রেতারা। তবে সমালোচকদের দাবি, এটা প্রাণঘাতী তাই সাধারণ মানুষের হাতে যাওয়া উচিত নয়।
২০২৩ সালে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজনের মালিকানায় এআর–১৫ রয়েছে। অ্যাসল্ট রাইফেলটি এত জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে বড় একটি কারণ, এই রাইফেলে সহজেই অন্যান্য সরঞ্জাম সংযোজন করা যায়। যেমন এটির মালিক চাইলেই এতে টেলিস্কোপ ও বড় আকারের ম্যাগাজিনসহ বাড়তি নানা জিনিস যুক্ত করতে পারেন।
বিল ক্লিনটন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ১৯৯৪ সালে বেসামরিক লোকজনের কাছে এআর–১৫–এর মতো অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি নিষিদ্ধ ছিল। তবে প্রভাবশালী ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের চাপের মুখে ২০০৪ সালে ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
তবে, ক্যালিফোর্নিয়া, ইলিনয়, মেরিল্যান্ড, নিউ জার্সি ও ওয়াশিংটনের মতো বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে সাধারণ মানুষের কাছে অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি নিষিদ্ধ। ক্যালিফোর্নিয়া সরকারের দাবি, বন্দুক নিষিদ্ধ করে আইন জারির কারণে গেল এক দশকে বেঁচে গেছে ১৯ হাজার মানুষের প্রাণ।
মন্তব্য করুন