রংপুরে সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পুলিশ সদস্যের স্ট্যাটাস নিয়ে পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিসির আলী (এসআই মজনু) তার স্ট্যাটাসে নগরীর সিটি বাজারের সামনে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি এবং এসপির নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
এখন পর্যন্ত হওয়া পাঁচটি মামলায় তাদের নাম না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পুলিশের এই সদস্য। প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে তারা কী ঈশ্বরের থেকেও ক্ষমতাশালী, সব আমলেই সুফল ভোগ করবেন।
এসআই মজনু তার ফেসবুক পোস্টে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে করে উল্লেখ করেন, ‘প্রিয় মিডিয়া/ সাংবাদিক/ আইনজীবী ভাই। প্রতিদিন কোর্টে মামলা হচ্ছে। ঘটনাস্থল সিটি বাজারের সামনে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি, জেলার পুলিশ সুপার বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের রায়ট টিম। আর মামলা হচ্ছে যারা ঘটনাস্থলে ছিল না। এত ফুটেজ, মিডিয়া কাভার থাকতে এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হচ্ছে।’
‘সুফল ভোগীরা কী আজীবন আর সব আমলেই সুফল ভোগ করবেন?’ ফেসবুক পোস্টে এই প্রশ্ন রাখেন তিনি।
পোস্টটি এসআই মজনু রংপুর জেলা ও মহানগর পুলিশের মিডিয়াসেলেও দেন।
ফেসবুক সম্পর্কে জানতে এসআই মজনুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আপনারা সংবাদকর্মীরা সত্য প্রকাশ করুন। আমি আমার বক্তব্য আমার ফেসবুকে দিয়েছি। শত শত ফুটেজ আছে। গত ১৯ জুলাইয়ে সিটি বাজার এলাকায় জেলা পুলিশের পোশাকধারীরা ছিলেন। এখানে মেট্রোপলিটন পুলিশের কেউ ছিল না। অথচ তাদের নামে মামলা হচ্ছে না। তাদের কারা বাঁচাচ্ছেন?’
এ ব্যাপারে জানতে রংপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ধরনের কোনো ফেসবুক পোস্ট এখনো তার চোখে পড়েনি।
বিষয়টি জানতে রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান এবং বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি।
রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আব্দুল বাতেনকে বাধ্যতামূলক অবসরের কারণে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই রংপুর সিটি বাজারের সামনে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে নিহত পলিটেকনিক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল তাহির হত্যা মামলায় নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই মজনুকে আসামি করা হয়েছে।
রংপুরে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের ঘটনায় এখন পর্যন্ত দায়ের করা পাঁচটি হত্যা মামলার পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আব্দুল বাতেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, মেট্রোপলিটন ডিসি ক্রাইম আবু মারুফ হোসেন, এসি আরিফুজ্জামান, আল ইমরান, ওসি মোন্তাসির, এসআই, কনস্টেবলসহ প্রায় ১৭ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন