জামালপুরে কৃষকদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি উন্নয়নে নিউট্রিশন ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়েছে। জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলা চত্বরে সোমবার (৫ মে) এ আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএফএডি কর্তৃক পরিচালিত “ডাইভার্সিফাইড রেজিলিয়েন্ট এগ্রিকালচার ফর ইমপ্রুভড ফুড এন্ড নিউট্রিশন সিকিউরিটি (রেইনস) প্রকল্পের কারিগরি সহযোগী গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশনের (গেইন) এ আয়োজনে অর্থায়ন করে গ্লোবাল এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড সিকিউরিটি প্রোগ্রাম (জিএএফএসপি)। ক্যাম্পেইনে উপজেলা থেকে ২৫০ জন কৃষক-কৃষাণী অংশ নেন।
সর্বোত্তম স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপাদানসহ একটি সুষম খাদ্য তালিকার গুরুত্ব বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, সুষম খাদ্য গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা, দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে ভারসাম্য বজায় রাখার মাধ্যমে স্বাস্থ্যগত উপকারিতা তুলে ধরা এবং পুষ্টি বিষয়ক তথ্য ভাগ করে নিয়ে কৃষকদের খাদ্য ও পুষ্টি সম্পর্কে সচেতন করাই এই নিউট্রিশন ক্যাম্পেইনের মূল উদ্দেশ্য। অনুষ্ঠানে পুষ্টি বার্তা সম্বলিত মঞ্চ নাটক উপস্থাপন, পুষ্টি বিষয়ক গান পরিবেশন, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিরাপদ পদ্ধতিতে রান্নার প্রদর্শনী এবং কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজনের মাধ্যমে কৃষক-কৃষাণীদের মধ্যে পুষ্টি ও স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়।
নিউট্রিশন ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন রেইনস প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মুহাম্মদ এমদাদুল হক, উপ-প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ আবু সিয়াম জুলকারনাইন, সিনিয়র মনিটরিং অফিসার মো. হাবিবুর রহমান, বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মো. মাসুদ রানা, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আমিনুল ইসলাম, গেইন-এর পোর্টফোলিও লিড ড. আশেক মাহফুজ, জিএএফএসপি ও আইএফএডির মিশন টিম, বকশীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা।
গেইন বাংলাদেশের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. আবুল বাসার চৌধুরী জানান, দানাদার খাদ্যশস্য, বিশেষ করে ধান ও চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। এ ছাড়া মাছ, মাংস, ডিম এবং দুধ উৎপাদনেও আমরা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি। তবে, এসব অর্জনের পরও পুষ্টির দিক থেকে বাংলাদেশ এখনো অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে, বিশেষ করে অনুপুষ্টির ক্ষেত্রে। এর ফলে রক্তশূন্যতা, বামনত্ব এবং কম ওজনের শিশু জন্মের মতো সমস্যা আমাদের দেশে নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো অপুষ্টি এবং সঠিক পুষ্টি জ্ঞানের অভাব। অথচ, যারা আমাদের খাদ্যের মূল যোগানদাতা এই কৃষকদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি ঠিক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে, ভবিষ্যতে আমরা খাদ্য উৎপাদনেও পিছিয়ে পড়তে পারি। এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গেইন বাংলাদেশে কৃষকদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি উন্নয়নে ‘রেইনস’ প্রকল্পের মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন