রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাউয়াজানি ও মুন্সীবাজার এলাকায় কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীর ভাঙন চলছে। এরই মধ্যে ভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় ৫০ বিঘা কৃষিজমি। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে ফসলি মাঠ, কবরস্থান, স্কুল, মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার, বাজার এবং কয়েকশ মানুষের বাড়িঘর। নদীভাঙনে দিশেহারা এ অঞ্চলের মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
সম্প্রতি সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সীবাজার ও কাউয়াজানি এলাকায় কয়েকদিন ধরে তীব্র ভাঙন চলছে। এরই মধ্যে কয়েক কিলোমিটার ফসলের জমি নদীতে চলে গেছে। উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়ন দেশের মানচিত্র থেকে হারাতে বসেছে। এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড বা স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয় জামাল মুন্সী জানান, গত বছরের এই দিনে আমাদের দেবগ্রামে শুরু হয়েছিল ভাঙন। সে সময় আমরা রাস্তা অবরোধসহ মানববন্ধন করেছি। এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ড মাত্র ১২ হাজার বস্তা জিও ব্যাগ নদীতে ফেলেছিল। তখন কিছুটা হলেও রোধ করা গিয়েছিল নদীভাঙন। এ বছর ফের ভাঙন শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। আপাতত জিও ব্যাগ ফেলে নদীভাঙন রোধ করা প্রয়োজন। না হয় আমরা মানববন্ধন বা রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি করব।
কাউয়াজানি এলাকার সালাম ফকির বলেন, জমিতে পাট বুনেছি। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। অনেক পাটসহ জমি নদীতে চলে গেছে। কী করব বুঝতে পারছি না। যদি ভাঙন স্থানে দ্রুত জিও ব্যাগ না ফেলা হয়, তাহলে আমাদের এই কাউয়াজানি এলাকা আর টিকবে না।
দেবগ্রাম মুন্সীপাড়ার বাসিন্দা আছিয়া বেগম বলেন, রাতে ঘুম হচ্ছে না। তিনবার নদী বাড়ি ভেঙেছে। এবার ভেঙে গেলে রাস্তায় থাকা ছাড়া আমাদের উপায় নেই। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, দ্রুত নদীতে জিওব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করা হোক।
একই ইউনিয়নের মুন্সীপাড়ার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, বাপ, দাদা, চাচার কবর অনেক আগেই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এত সরকার এলো-গেল; শুধু আশার বাণী শুনিয়ে গেল, কিন্তু নদীশাসনের কাজ আর করল না।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আল আমিন জানান, দেবগ্রাম ইউনিয়নে নদীভাঙনের কথা শুনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন