শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবিকে কেন্দ্র করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নাটোর থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাস বন্ধ করে দেওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজশাহীর শিরোইল বাসস্ট্যান্ডে হতাশ হয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে অনেক যাত্রীকে। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, অগ্রিম টিকিট কেটে রাখলেও টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। পরিবহন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া মেলেনি। ফলে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। তবে এ রুটে কেবল একতা ট্রান্সপোর্টের বাস স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে।
ঢাকাগামী যাত্রী কামাল হোসেন বলেন, শুক্রবার রাতে রওনা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে লোকাল বাস, সিএনজি আর ভাড়া গাড়ি ধরে ঢাকায় যেতে হয়েছে। সাধারণত ৭০০ টাকায় ঢাকায় যাই, এবার খরচ পড়েছে প্রায় ১২০০ টাকা।
আরেক যাত্রী রায়হান হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুনেছিলাম সকালে বাস ছাড়বে, তাই ভোরে এসেছিলাম। কিন্তু কিছুই হলো না। এখন জরুরি কাজে ঢাকায় যেতে বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজতে হবে। কয়েকজন মিলে হয়তো গাড়ি ভাড়া করতে হবে।
নজরুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, আমার ঢাকায় জরুরি কাজ আছে। কিন্তু বাস চলছে না, আর কোনো বিকল্পও নেই। পরিবহন মালিকরা যাত্রীদের কষ্ট একটুও বুঝছে না।
সম্প্রতি শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে নামেন। এর প্রেক্ষিতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় শ্রমিক ও মালিকপক্ষের বৈঠকে চালক, সুপারভাইজার ও সহকারীর বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়। আলোচনায় নির্ধারিত হয়— চালকের বেতন ট্রিপপ্রতি ১,২৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১,৭৫০ টাকা, সুপারভাইজারের ৫০০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং সহকারীর ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা করা হবে শুক্রবার থেকেই। কিন্তু বাস্তবায়নের আগের রাতেই মালিকরা হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বজলুর রহমান রতন বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে তিন দফা বৈঠক করেছি। শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবিও মেনে নিয়েছি। কিন্তু কিছু শ্রমিক নতুন দাবি তুলে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করছে। মালিক-শ্রমিক উভয়ের মধ্যে সমঝোতা না হলে গাড়ি চালানো সম্ভব নয়।
অন্যদিকে রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি অভিযোগ করে বলেন, মালিকপক্ষ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নতুন বেতন কার্যকর করেনি। শুক্রবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই বাস বন্ধ করে দিয়েছে।
মন্তব্য করুন