ঈশ্বরদীতে গরু চুরি বেড়ে যাওয়ায় গ্রামবাসীরা রাতে দল বেঁধে পাহারার ব্যবস্থা করেছেন। গ্রাম এলাকার পাকা সড়কে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। রাত ১২টার পর এসব সড়কে চলাচলকারী সন্দেহভাজন গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামীণ সড়কে গত ১৭ জানুয়ারি প্রথম চেকপোস্ট ও পাহারা দল গঠন করা হয়। পরে বয়রা, খালিশপুর, বাড়াহুসিয়া, দরগাবাজার, পাড়াশিধাই, হাতিগাড়াসহ আশপাশের আরও কয়েকটি গ্রামে রাত জেগে পাহারা শুরু হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ঈশ্বরদীর বিভিন্ন গ্রামে বেশ কিছুদিন ধরে আশংকাজনক হারে গরু চুরি বেড়ে যায়। গত ১০ জানুয়ারি রাতে সাড়া ইউনিয়নের মাজদিয়া ইলশামারি গ্রামে শহীদ মন্ডলের দুটি বলদ ও একটি গাভি এবং মাজদিয়া পশ্চিম খাঁ পাড়ার সাইফুলের বাড়িতে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা চুরি করে সংঘবদ্ধ চোর চক্র।
এর পাশাপাশি মোটরসাইকেল, ভ্যান ও অটোবাইক চুরির ঘটনাও ঘটছে। বাড়ি ও দোকানের তালা কেটে ঘটছে চুরির ঘটনা, চুরি বেড়ে যাওয়ায় চোরের দৌরাত্ম্য থামানো যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে গ্রামবাসী রাতে পাহারা বসিয়েছেন।
দাশুড়িয়ার বয়রা গ্রামের কৃষক আশরাফুল আলম চেতন জানান, গত ১৪ জানুয়ারি রাত ৩টার দিকে তার গোয়ালঘর থেকে ২টি গরু চুরি হয়েছে। গরুর দাম প্রায় দুই লাখ টাকা।
একদিন আগে ১৩ জানুয়ারি রাতে সুলতানপুর গ্রামের আব্দুল বাতেন বিপুলের গোয়ালঘরের তালা কেটে একটি গাভি চুরি করে সংঘবদ্ধ চোর চক্র। চুরির কাজে ব্যবহার করা হয় পিকআপ।
সুলতানপুর গ্রামের নবী ফকির বলেন, দাশুড়িয়ার ইউপি চেয়ারম্যান ও থানার ওসির সার্বিক সহযোগিতায় আমরা চুরি ঠেকাতে রাতে পাহারা দিচ্ছি। পাহারা টিমের সদস্যদের হাতে লাঠি, টর্চলাইট ও বাঁশি আছে। কাউকে সন্দেহজনক মনে হলেই একসাথে বাঁশি বাজাই। বাঁশি শুনে পাহারার অন্য দলের সদস্যরা এসে উপস্থিত হয়।
এছাড়া চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশিও চলছে। আনন্দের সঙ্গে আমরা গ্রামবাসীরা পাহারা দিচ্ছি। রাতে মুড়ি খাওয়া ও খিচুড়ি রান্নার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। রাত জেগে পাহারা দেওয়ায় এখন চোরের উপদ্রব কমেছে। পুলিশের টহল দল প্রায় প্রতিরাতেই আমাদের এলাকায় এসে খোঁজখবর নিয়ে যায় বলেও জানান তিনি।
সুলতানপুরের পাশে পাড়াশিধাই গ্রামের কৃষক আজাহার আলী বলেন, গত ১৩ তারিখে গোয়ালঘর থেকে ৩টি গাভি করে চুরি করে নিয়ে যায় চোরের দল। চোরদের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের রুখতে চেষ্টা করি। কিন্তু তাদের কাছে ধারাল অস্ত্র (রাম দা, চাপাতি, ছুরি) থাকায় ধাওয়া করেও আটকাতে পারিনি।
দাশুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বকুল সরদার বলেন, এলাকায় গরু চুরিসহ আরও বেশকিছু চুরির ঘটনার পর পুলিশের সাথে কথা বলেছি। সকলের মতামত নিয়ে চুরি ঠেকাতে রাত জেগে গ্রাম পাহারা ও চেকপোস্ট বসানোর পরামর্শ দিয়েছি।
ঈশ্বরদী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, গরু চুরির ঘটনায় গ্রামবাসী নিজেরাই রাতে পাহারার ব্যবস্থা করেছেন। আমরা তাদের সহযোগিতা করছি। আশা করি গরু চুরিসহ অন্যান্য চুরির ঘটনা কমে যাবে।
মন্তব্য করুন