ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকে কৃষকদের জিম্মি করে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করছেন ডিলাররা। এতে করে কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, নির্ধারিত দামের বিষয়ে কৃষকরা প্রতিবাদ করলে সারের সংকট দেখান। এতে তাদের বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত দামে সার কিনতে হচ্ছে।
চলতি বোরো মৌসুমে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ করছেন কৃষকরা। খুচরা বিক্রেতারা কেজি প্রতি সার পাঁচ থেকে ছয় টাকা বেশি নিচ্ছেন। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ফলে এক প্রকার বাধ্য হয়েই বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে তাদের।
কৃষকদের অভিযোগ, রশিদের মাধ্যমে সার বিক্রির নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না ডিলাররা। সরকার নির্ধারিত দামের চাইতে বস্তা প্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বেশি নিচ্ছে।
কসবা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১৩ হাজার ৭৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। কৃষকরা এখন জমিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জানা যায়, উপজেলায় বিসিআইসির ২০ জন এবং বিএডিসির ১৪ জন ডিলারের মাধ্যমে সার সরবরাহ করা হয়। সরকারিভাবে এক বস্তা ট্রিপল সুপার ফসফেট-টিএসপি ১৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও চাষিদের কাছে বিক্রি হচ্ছে ১৫০০-১৬০০ টাকায় আর, মিউরেট অব পটাশ ওএমওপি সার প্রতি বস্তা ১০০০ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে এক ১৩০০ থেকে ১৪০০০ টাকায়। একইভাবে ইউরিয়া সার এর দাম প্রতি বস্তা ১৩৫০ নির্ধারণ করা হলে ও বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকায় ডিএপি ১০৫০ টাকায় নির্ধারণ করা হলেও বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকায়।
ন্যায্যমূল্যে সার কিনতে না পারায় উৎপাদন খরচ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন উপজেলার কৃষকরা। ফলে বাধ্য হয়ে অল্প পরিমাণে সার দিচ্ছেন জমিতে। উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নে সৈয়দাবাদ গ্রামের কৃষক আমজাদ ভুইয়া বলেন, মনকাশাইর বাজারের ডিলার নাসির মিয়ার দোকান থেকে ৩২ টাকা কেজিতে ইউরিয়া সার কিনেছেন তিনি। সে হিসাবে বস্তার দাম হয় ১৬০০ টাকা।
একই গ্রামের কৃষক হালিম খান জানান, ৩৫ টাকা ধরে ইউরিয়া সার কিনেছেন তিনি।
এদিকে, সারের বাড়তি দামের জন্য ডিলার ও ব্যবসায়ীরা একে অপরকে দুষছেন। সঠিক মূল্যে সার বিক্রি করা হচ্ছে কি না তা যাচাই করতে কৃষি বিভাগের কোনো তদারকি নেই বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।
কসবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাজেরা বেগম বলেন, উপজেলায় সারের কোনো সংকট নাই। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার মুক্তার জানান, অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সারের বাড়তি দাম নিলে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন