ঝিনাইদহের সোসিও ইকোনমিক হেলথ এডুকেশন অর্গানাইজেশন (সিও) এনজিওর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলামের নির্দেশে গত ১৫ এপ্রিল থেকে ঝিনাইদহ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ইয়ারুল ইসলাম এ তদন্ত কাজ শুরু করেন।
এর আগে তদন্ত কর্মকর্তা ১০ জনের নাম উল্লেখ করে কোটচাঁদপুরের তালসার মেঠো পাড়ার আরও ৮ জনসহ ১৮ জন অভিযোগকারীকে নির্দিষ্ট দিনে তার দপ্তরে হাজির হতে নোটিশ দেন। উপপরিচালকের দপ্তর ও অভিযোগকারীদের সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে সিও অফিসে আটকে নির্যাতন ও মিথ্যা চেকের মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে গত ২১ মার্চ মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচি পালন করে সংস্থাটির নির্যাতিত কর্মীরা। সিও এনজিওর প্রাক্তন কর্মী গাইবান্ধার সুই গ্রামের এবিএম মাহবুবুর রশিদ তদন্তের খবর নিশ্চিত করে জানান, গত ১৫ এপ্রিল তাকেসহ ৫-৬ জনকে ডাকা হয়েছিল। তদন্ত কর্মকর্তা প্রথমে তাদের মৌখিক বক্তব্য শোনেন এবং লিখিত নেন। সিও এনজিওর নির্বাহী পরিচালক সামছুল আলমও তদন্ত কর্মকর্তার দপ্তরে হাজির হয়ে তার বক্তব্য পেশ করেন।
তবে সিও এনজিওর প্রাক্তন এসব কর্তকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই তদন্ত নিয়ে তাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। সিও এনজিও প্রভাব খাটিয়ে সব ম্যানেজ করে নিচ্ছেন। ফলে তারা ন্যায়বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে পারেন ।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে ঝিনাইদহের সিও এনজিওর বিরুদ্ধে চাকরি প্রদানের নামে খোলা চেক ও নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প নিয়ে মামলা করার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রপত্রিকায় একাধিকবার খবর প্রকাশিত হলেও সিও এনজিও বহাল তবিয়তে শত শত মামলার জালে আটকিয়ে সাবেক কর্মীদের জেলে ভরছেন ও কোটি কোটি টাকা আদায় করছেন। এ নিয়ে গত ২১ মার্চ ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে নির্যাতিত ব্যক্তিরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সিও এনজিও কর্তৃপক্ষ গাইবান্ধার সুই গ্রামের এবিএম মাহবুবুর রশিদ, শৈলকুপার চন্ডিপুর গ্রামের সাবিনা ইয়াসমিন, মেহেরপুরের আমদহ গ্রামের আমিরুল ইসলাম, যশোরের রবিউল, কুষ্টিয়ার শওকত আলী, একই জেলার গৌরাঙ্গ কুমার, কালীগঞ্জের আশিক, পাবনার সুবর্ণা খাতুন, সোহেল রানা, সাইফুল ইসলাম, শৈলকুপার মাহমুদ ও মহেশপুরের রুপা খাতুনসহ সহস্রাধিক ব্যক্তির নামে মিথ্যা চেকের মামলা করে হয়রানি করছেন।
তবে সিও এনজিওর নির্বাহী পরিচালক শামসুল আলম বরাবরই তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করে আসছেন। এ দিকে তদন্তের বিষয়ে ঝিনাইদহ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ইয়ারুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কালবেলাকে জানান, তদন্ত সম্পন্ন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর রিপোর্ট পেশ করা হবে। রিপোর্টের প্রেক্ষিতে সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন