

নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকাই চলচ্চিত্রে আলো ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সালমান শাহ। সেই আলোয় দেখা মিলেছিল নায়িকা শাবনূরেরও। তাদের আগমনে ঢাকাই সিনেমা পেয়েছিল নতুন প্রাণ, পেয়েছিল রোমান্টিক চলচ্চিত্রের এক সোনালি যুগ। মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে তারা একসঙ্গে অভিনয় করেছেন ১৪টি জনপ্রিয় ছবিতে, যেগুলোর অনেকগুলোই আজও দর্শকের মনে জাগিয়ে তোলে আবেগ ও নস্টালজিয়া।
‘তুমি আমার’, ‘সুজন সখি’, ‘বিচার হবে’ কিংবা ‘আনন্দ অশ্রু’—প্রতিটি ছবিতেই তাদের রসায়ন ছিল অনন্য। যেন পর্দার প্রেম বাস্তবের ছায়া হয়ে উঠেছিল দর্শকের চোখে। সময় গড়িয়ে গেছে তিন দশক; কিন্তু সালমান-শাবনূরের জুটি এখনো রয়ে গেছে স্মৃতির অমলিন পাতায়।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় পরিবারের সঙ্গে শান্ত জীবন কাটাচ্ছেন শাবনূর। সম্প্রতি দেশের প্রথম সারির একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে ভেঙেছেন নীরবতার দেয়াল, সালমান শাহকে নিয়ে জানিয়েছেন নিজের অনুভব-অনুভূতি।
শাবনূর বলেন, “সালমান শাহ আর আমাকে নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। তাদের উদ্দেশে শুধু বলব, এসবের কোনো কথাই সত্য নয়। সালমানের কোনো বোন ছিল না, তাই আমাকে ছোট বোনের মতোই দেখতেন। আমাকে ‘পিচ্চি’ বলে ডাকতেন। তার মা-বাবাও আমাকে খুব আদর করতেন, মেয়ের মতোই ভালোবাসতেন।’’
নিজের অনুভবের কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমিও সালমানকে ভাইয়ের মতোই দেখতাম। তবে আমাদের মধ্যে ছিল দারুণ বন্ধুত্ব। সালমান নাচে একটু দুর্বল ছিল। প্রায়ই বলতেন, ‘আমাকে একটু নাচ দেখিয়ে দে তো।’ আমি হাসতে হাসতে দেখিয়ে দিতাম।’’
সালমানের সঙ্গে শাবনূরের প্রথম দেখা হয়েছিল এফডিসিতে, সেদিন মৌসুমীর সঙ্গে সালমানের শুটিং চলছিল। পরবর্তী সময়ে ‘তুমি আমার’ ছবিতে সালমানের সঙ্গে কাজের সুযোগ হয় শাবনূরের। সেই ছবির সাফল্যের পর দর্শকরা তাদের নতুন জুটিকে ভালোবাসতে শুরু করেন। শাবনূর বললেন, ‘আমাদের বোঝাপড়াটা ছিল অসাধারণ, একই দৃশ্যে আমরা একে অন্যের চোখের ইশারা বুঝতে পারতাম।’
সালমান-শাবনূরের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল—এমন গুঞ্জন দুজনের কাজের শুরু থেকেই প্রচলিত। শাবনূরের ভাষায়, ‘সালমানকে আমি ভাই ছাড়া অন্য কোনো চোখে দেখিনি। কিছু মানুষ আমাদের সম্পর্ক নিয়ে নানা মুখরোচক গল্প বানিয়েছে। কেউ কেউ সেটা দিয়ে ব্যবসাও করেছে। এতে আমার কষ্ট হয়েছে; কারণ, আমি আমার ক্যারিয়ারটা অনেক কষ্ট করে গড়েছি।’
সালমানের স্ত্রী সামিরা হক সম্পর্কেও কথা বলেন শাবনূর। ‘সামিরা আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। শুটিংয়ে প্রায় সব সময়ই সে থাকত। আমাদের মধ্যে কখনো কোনো মনোমালিন্য হয়নি। সামিরা নিজে আমার হাতে চুড়ি পরিয়ে দিয়েছে, পোশাক মিলিয়ে দিয়েছে, কানের দুল বেছে দিয়েছে—আমরা সত্যিই খুব ভালো সময় কাটিয়েছি’, যোগ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন