ড.মো.শফিকুল ইসলাম
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:১৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

একজন অনুকরণীয় ও প্রকৃতি প্রেমিক রাজনীতিবিদ

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক। ছবি : সংগৃহীত
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক। ছবি : সংগৃহীত

আজ আমাদের গর্বের দিন। শুরু হলো আমদের মুক্তিসংগ্রামের বিজয় অর্জনের মাস ডিসেম্বর। এই মাসে বিজয় রচিত হয়েছে। আবার আজ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিকের জন্মদিন। আজ যেহেতু বিজয়ের মাসের প্রথম দিন। সেজন্য আজকের দিনে তার জন্মদিন অনেক তাৎপর্য। কারণ তিনি তরুণ বয়সে বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এটা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয়নি তখন। কিন্তু তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত আদর্শ ধারন করে বিদায় ঐসময়ে ঘরে বসে থাকতে পারেনি।

আজ তার জন্মদিনে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তিনি একজন রাজনীতিবিদ, সমাজ সেবক এবং প্রকৃতি প্রেমিক। যার উদাহরণ আমি লেখায় তুলে ধরছি।

প্রকৃতি আমাদেরকে বাঁচিয়ে রাখে এবং এই প্রকৃতিকে ভর করে আমাদের জীবন চালাতে হয়। প্রকৃতি নিষ্ঠুর হলে আমাদের সামায়িক সময়ের জন্য কষ্ট পেতে হয়। যেমন ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর এর কথা সবার মনে থাকার কথা। অনেক গতিতে বাতাসের বেগ ছিল যা আমাদের অনেক ক্ষতি করে গিয়েছে। কিন্তু তারপরও অনেক জমিতে পলি ফেলে দিয়ে ফসল ফলানোর মতো আমাদের অনেক উপকারও করেছে। আমাদের কারণে মাঝে মাঝে প্রকৃতি নিষ্ঠুর হয়। কারণ আমরা প্রকৃতির প্রতি সঠিক বিচার করি না। প্রকৃতি যে আমাদের বেঁচে থাকার জন্য কত কিছু দিয়ে যাচ্ছে, তা আমরা স্মরণ করি না এবং বুঝতে চাই না।

প্রকৃতির সব কিছুর সঙ্গে মানুষের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। মায়ের সঙ্গে যেমন সন্তানের ভ্রূণের সম্পর্ক, প্রকৃতির সঙ্গে সেই রকম সম্পর্ক জীবনের। আমরা প্রকৃতিরই এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ও সম্পর্ক। যত দিন পৃথিবী থাকবে ততদিন এইভাবে আমাদের সম্পর্ক চলমান থাকবে। এখানে কেউ ব্যতিক্রম করতে পারবে না। প্রকৃতি ও প্রাণীদের প্রতি ভালোবাসা মানুষদের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত। অনেক দেশে কুকুর, বিড়াল, পাখিদের প্রতি যে পরিমাণ সংবেদনশীল, কিন্তু আমরা মানুষ হয়ে শ্রেষ্ঠ প্রাণী মানুষদের প্রতিও ততটা হতে পারিনি। এটাই দুঃখজনক।

কিন্তু সেই প্রকৃতির প্রতি শৈশব কাল থেকে প্রেম ও ভালোবাসা দেখিয়ে আসছে একজন সুপরিচিত ব্যক্তি। এখনও তার সেই মায়া প্রকৃতির প্রতি বহমান এবং চলবে আজীবন। কারণ তিনি ছোটকাল থেকে প্রকৃতিকে ভালোবাসতেন। যেমন, তিনি সখ করে কবুতর পালতেন এবং নিয়মিত এদেরকে খাবার ও পরিচর্যা করতেন। আরেকটি ব্যতিক্রম উদাহরণ দিচ্ছি, যেমন তখনকার সময়ে তিনি খেজুর গাছসহ অনেক গাছে হাড়ি বেঁধে রাখতেন এবং খড়কুটা দিতেন যাতে পাখিরা বাসা বানাতে পারে। ডিম দিত এবং বাচ্চা ফুটাত ঐসব হাড়িতে। কি দারুণ ভালোবাসা পাখিদের প্রতি! অর্থাৎ পাখিকে ভালোবাসা মানে প্রকৃতিকে ভালোবাসা। আমাদের প্রত্যেকের এমন হওয়া উচিৎ। প্রকৃতির প্রতি আমাদের অনেক দায় রয়েছে। এভাবে প্রকৃতিকে ভালোবেসে কিছুটা দায় কমানো যায়।

ফেসবুকে পাখিদের খাবার দিচ্ছেন এমন একটি পোস্ট এর দৃশ্য ভাইরাল হয়েছে। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ফজরের নামাজ আদায়ের পর পাখিদের সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় অতিবাহিত করেন। প্রতিদিন সকালে ওরা আমার জন্য অপেক্ষায় থাকে, আমিও থাকি ভোরের অপেক্ষায়। কখন যাব পাখিদের খাবার দিতে। ভালোবাসা থেকে অভ্যাস, আপনারাও পাখি প্রেমি হোন ভালো লাগবে। এভাবে প্রতিদিন জাতীয় সংসদের সামনে শত-শত পাখিদের খাবার দিয়ে থাকেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক। এতে পাখি ও উনার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এটা এক ধরনের মানবিক আচরণ পাখি ও প্রকৃতির প্রতি।

আবার এক সময় তিনি তার সরকারি গাড়িতে করে ন্যাম ভবন থেকে ধানমণ্ডি যাচ্ছিলেন, ঐ সময় তার চোখে পড়ে যে এক ব্যক্তি খাঁচায় করে অনেকগুলো পাখিকে বন্দি করে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে হেঁটে যাচ্ছেন। তিনি দেখামাত্র ঐ ব্যক্তির নিকট থেকে পাখিগুলো ক্রয় করে খোলা আকাশে মুক্ত করে দেন। এটিও ইংরেজি পত্রিকা ডেইলিস্টারে সংবাদ প্রকাশ হয় এবং পরবর্তীতে তা ভাইরাল হয়। এগুলো থেকে আমাদের অনেক শেখার বিষয় রয়েছে এবং আমাদেরকে এইভাবে প্রকৃতিকে ভালোবাসতে হবে। তাহলে প্রকৃতি আমাদের প্রতি নিষ্ঠুর হবে না এবং পরিবেশ ও জলবায়ু বিরূপ আচরণ করবে না। আমাদের অবহেলায় দিন দিন জলবায়ু এবং পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। যা রীতিমতো আমাদের জীবনের জন্য গ্লোবাল ক্রাইসিস হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব জলবায়ুর কারণে এক চরম হুমকির মুখে। যিনি প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা দেখালেন এবং যাকে নিয়ে এতক্ষণ লিখলাম তিনি হলেন আমাদের সকলের পরিচিত এবং জাতীয় সংসদের বর্তমান হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন পরিক্ষিত রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্য। তিনি শেরপুর-১ থেকে পাঁচবারের নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য ও ১০ম, ১১ তম জাতীয় সংসদের হুইপ ছিলেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক ১ডিসেম্বর, ১৯৫৭ সালে শেরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। আমার দেখা তিনি সহজ সরল রাজনীতিবিদ। তার তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৭৯ সালে কলেজ সংসদের ভিপি নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে।

তিনি ১৯৮৮ সালে একবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে শেরপুর-১ আসন থেকে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২৬ নভেম্বর, ২০২৩ সালে টানা ষষ্টবারের মতো শেরপুর-১ থেকে নৌকা প্রতীকে তিনি মনোনয়ন পেয়েছেন। আমি তার সফলতা কামনা করি। বর্তমানে দ্বিতীয়বারের জন্য তিনি জাতীয় সংসদের একজন হুইপ। যার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

তিনি একজন অনুকরণীয় রাজনীতিবিদ কারণ তিনি হলেন শেরপুরের মানুষের আস্থার ঠিকানা এবং গণ মানুষের প্রিয় নেতা। তিনি একজন সৎ ও নিরহংকারী মানুষ এবং সকল পর্যায়ের মানুষ তার নিকট যেকোন মুহূর্তে দেখা করতে পারেন। আমি খুবই কাছ থেকে দেখেছি, যে বাবার বাড়িতে তিনি থাকেন সেটা যদি কেউ দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন। তিনি কত স্বাভাবিক ও অতি সাধারণ পরিবেশে বসবাস করে থাকেন। এ থেকে ধারণা করতে পারবেন তিনি যে উচ্চ বিলাসী মনের মানুষ নয় এবং অন্যান্য সাধারণ মানুষের ন্যায় তার জীবনযাপন কিন্তু তাকে নিয়ে মিথ্যা অপবাদ এবং ষড়যন্ত্র করা হয়। যার তীব্র নিন্দা জানাই এই লেখার মাধ্যমে।

সবার দুঃখ কষ্ট শেয়ার করে তিনি শেরপুরবাসীকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যেখানে তাকে সহায়তা করছেন এবং স্নেহ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বঙ্গবন্ধুর এক একনিষ্ঠ সৈনিক কারণ ১৪-১৫ বয়সে জাতির জনকের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি শেরপুরের সবচেয়ে কনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা। তার নিকট গেলে আমার জানামতে সবাই তার নিকট থেকে সাহায্য ও সহযোগিতা পেয়ে থাকেন। তার মধ্যে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের প্রকৃত আদর্শ ও চেতনা ধারণ করতে দেখতে পাই। তিনি খুবই স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করে থাকেন। তিনি করোনার সময়ে ঘরে বসে থাকেননি। সরকারের দেওয়া ত্রাণ এবং নিজস্ব ব্যবস্থায় অনেক ত্রাণ বিতরণ করছেন নিজ হাতে। জনকল্যাণের কাজ করতে গিয়ে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

হুইপ আতিক করোনাকালীন সময়ে প্রথম থেকেই একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের মাঝে নানা সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। বন্যার সময়ও তিনি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনসহ সরকারী বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিয়ে আসছিলেন।

আমি মনে করি তিনি একজন আদর্শ রাজনীতিবিদ, তাকে অনুকরণ করা যায়। এটাও বলতে চাই পাখিরা যে মানুষটিকে ভালোবেসে কাছে আসতে পারে সেখানে তার নিকট শেরপুরের জনগণ অবশ্যই নিরাপদ। শেরপুরের মানুষ তাকে অনেক বেশি ভালোবাসেন এটা যেমন সত্য তেমনি এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছি। আমি তার সুস্বাস্থ্য এবং ভবিষ্যত সফলতা কামনা করছি।

লেখক: ড.মো.শফিকুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সন্ধ্যার মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

ঝালকাঠিতে গভীর নলকূপে পানির সংকট

ব্যাট-বলে সাকিবকে শরীফুলের টেক্কা

দেশকে আগের মতো ভিক্ষুকের জাতি বানাতেই এমন সহিংসতা: প্রধানমন্ত্রী

রাজবাড়ীতে ভাড়ায়চালিত বাইকারের বিরুদ্ধে যাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ

সরবরাহ সচল হওয়ায় স্বস্তি ফিরছে ব্রাহ্মণপাড়ার সবজি বাজারে

আজ কোন এলাকায় কত ঘণ্টা কারফিউ শিথিল

রিয়ালের জার্সিতে কবে মাঠে নামছেন এমবাপ্পে?

স্বেচ্ছায় কারাগারে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনি শরণার্থীরা

অলিম্পিকে পদকের লড়াই হবে যে ইভেন্টগুলোতে (২৭ জুলাই)

১০

দক্ষিণ আমেরিকা নিয়ে নতুন ছক সৌদির

১১

রাশিয়ার সাবেক উপপ্রতিরক্ষা মন্ত্রী গ্রেপ্তার

১২

ইসরায়েল-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে?

১৩

মানামার বাতাসে দূষণ সবচেয়ে বেশি, ঢাকার পরিস্থিতি কী

১৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার বর্জ্যে দুর্ভোগে ৩ লাখ মানুষ

১৫

স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

১৬

অলিম্পিকে নিষিদ্ধ ছিল যে দেশগুলো

১৭

দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা

১৮

উদ্বোধনীতে অ্যাথলেটদের চেয়ে বেশি উৎফুল্ল বাংলাদেশের কর্তারা

১৯

কুষ্টিয়ায় নাশকতা মামলায় আ.লীগ নেতার ছেলে গ্রেপ্তার

২০
X