মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এএসএম নাসির উদ্দীন এলানের কারাদণ্ডের রায়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারপূর্বক তাদের মুক্তি দাবি করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। একইসাথে নিবর্তনমূলক সব কালাকানুন বাতিল করারও দাবি জানান তিনি। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান সাইফুল হক।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, আদিলুর ও এলানের সাজা এবং কারাদণ্ডাদেশে রাষ্ট্রীয় রোষের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এই রায়ে এটা আরও একবার প্রমাণিত হলো যে, দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি কত শোচনীয়! অধিকারের মতো শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থার দুই প্রধান ব্যক্তিকে যদি সরকারের কথিত ভুল তথ্যের জন্য এক দশক ধরে হয়রানিমূলক মামলায় ধারাবাহিক নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হতে হয় এবং সর্বশেষে আদালতের রায়ে দুই বছরের দণ্ডাদেশ আর জরিমানা গুণতে হয়, সেটা যে মানবাধিকারের চরম লংঘন তা অত্যন্ত স্পষ্ট। এই রায়ে যে বিরুদ্ধ মত ও স্বাধীন তথ্য প্রকাশের বিরুদ্ধে সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে- তাও পরিষ্কার।
তিনি উল্লেখ করেন, গুম-খুন-বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসসহ গুরুতর মানবাধিকার লংঘনের তথ্য প্রকাশ করে জনগণের মৌলিক গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকার রক্ষায় বহু বছর ধরে অধিকার ধারাবাহিকভাবে কাজ করে আসছে। মানবাধিকারের পক্ষে তাদের তৎপরতা মানুষের ভরসারও জায়গা হয়ে উঠেছে। তাদের নিবেদিতপ্রাণ তৎপরতা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেই প্রশংসিত হয়েছে। তাদের সহায়তার পরিবর্তে সরকার তাদের তহবিল বন্ধ করে দেওয়াসহ নানাভাবে হয়রানি করে আসছে।
বিবৃতিতে সাইফুল হক বলেন, বিতর্কিত আইসিটি আইনের আওতায় দায়ের করা হয়রানিমূলক এই মামলা বহু আগেই তার 'মেরিট' হারিয়েছে। এরপর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে সর্বশেষ সাইবার নিরাপত্তা আইন পাসের পর এসব মামলা বাতিল হবার কথা। অথচ সরকার বাতিল হওয়া আইনের মামলাগুলোকেও স্বাধীন মতপ্রকাশ ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে ব্যবহার করে আসছে।
তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে সরকার দেশের বিচার ব্যবস্থাকে তাদের অনুগত করে ফেলেছে। বিরোধী মত ও বিরোধী দল দমনে তারা বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহার করছে। এই পরিস্থিতি দেশে আইনের শাসনকে গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে নিক্ষেপ করেছে।
মন্তব্য করুন