মৌলিক চাহিদা উপেক্ষার পরও ফুটবলাররা ভয়ে বিশ্ব ফুটবল সংস্থার (ফিফা) বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারছেন না—দাবি পেশাদার ফুটবলারদের সংগঠন ফিফপ্রো সাধারণ সম্পাদক অ্যালেক্সি ফিলিপসের!
এ সংগঠন বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬৬ হাজার ফুটবলারকে প্রতিনিধিত্ব করে। ফিফপ্রো সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস করেন, খেলোয়াড়রা ক্লাব এবং ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সম্ভাব্য বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে চিন্তিত। অতিরিক্ত ম্যাচ খেলার কারণে খেলোয়াড়দের বিশ্রামের অভাব প্রকট হচ্ছে। অনেক ফুটবলার নাকি এ নিয়ে ফিফপ্রোর কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গোদের ওপর বিষফোড়া ছিল সদ্য সমাপ্ত সম্প্রসারিত ক্লাব বিশ্বকাপ। যে কারণে চেলসি মৌসুমের শেষ ম্যাচ খেলেছে ১৩ জুলাই। ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালের ৩৫ দিন পর ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচ খেলবে ব্লুজরা। যা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, রীতিমতো দম ফেলার ফুরসত পাননি চেলসির ফুটবলাররা। তারপরও ক্লাব এবং নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার ভয়ে খেলোয়াড়রা চুপ।
এ সম্পর্কে অ্যালেক্সি ফিলিপস বলেন, ‘খেলোয়াড়রা মুখ খুলতে ভয় পান। কারণ, তাদের ক্ষমতা নেই। এককভাবে শীর্ষ ১ শতাংশ খেলোয়াড়ের হয়তো সম্পদ আছে। কিন্তু ৯৯ শতাংশ খেলোয়াড়ের কিন্তু নিজস্ব ইউনিয়ন বা সংস্থা ছাড়া কোনো ক্ষমতা নেই।’
ফিফপ্রো সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘ক্লাব বিশ্বকাপের আগে আমি কিছু শীর্ষ তারকার সঙ্গে কথা বলছি। ফুটবলাররা জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময় ধরে বিশ্রামের কোনো সুযোগ ছিল না। একজন তো বলেই ফেলেন, আমি শুধু তখনই বিশ্রাম পাই, যখন আহত হই। কিন্তু অন্যরা কথা বলার বিষয়ে হতাশ এবং উদাসীন ছিল।’
সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবলারদের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড় নিয়ে বেশ সরব ফিফপ্রো। ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়ে ফিফার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিল এ সংগঠন। আসর সম্পর্কে ফিফপ্রো সাধারণ সম্পাদক অ্যালেক্সি ফিলিপস আরও বলেন, ‘বিভিন্ন খেলোয়াড় সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও রেকর্ড করে বলছেন, আমরা মনে করি ক্লাব বিশ্বকাপ দারুণ এক টুর্নামেন্ট। আসলে এমনটি বলতে তাদের নিয়োগকর্তা বাধ্য করেছেন। আপনার সামনে স্ববিরোধী পরিস্থিতি বিদ্যমান, যেখানে খেলোয়াড়রা হৃদয়ের কথা বলতে পারেন না! তারা প্রতিকূল অবস্থায় রয়েছেন। তারা সত্যি বলতে গেলে পরিণতি খারাপ হতে পারে। এ কারণে অনেকেই চুপ।’
ফিফপ্রো আরও বিশ্বাস করে, ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর অধীনে খেলাধুলা পরিচালনায় ‘স্বৈরাচারী’ প্রথা চলছে। যেখানে খেলোয়াড়দের মৌলিক চাহিদার বিষয়গুলো উপেক্ষিত। শুক্রবার আমস্টারডামে ৫৮টি খেলোয়াড় ইউনিয়নের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকের পর ফিফপ্রো বলেছে, ‘ফিফা বিশ্বের বিভিন্ন অংশে খেলোয়াড়দের সম্মুখীন হওয়া প্রকৃত সমস্যাগুলোকে পরিকল্পিতভাবে উপেক্ষা করে চলেছে এবং তাদের চুপ করিয়ে দিচ্ছে। যে সংস্থা বিশ্বব্যাপী নেতৃত্বের দাবি করে, তাদের পক্ষে খেলোয়াড়দের মৌলিক চাহিদা উপেক্ষা করা অগ্রহণযোগ্য।’
সদ্য সমাপ্ত ক্লাব বিশ্বকাপ মানবাধিকারের প্রতি উদ্বেগজনক সংবেদনহীনতা প্রদর্শন করেছে। স্পেন, মেক্সিকো, সুইজারল্যান্ড এবং কিরগিজস্তানের খেলোয়াড় ইউনিয়নগুলোকে আমস্টারডামের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কারণ, তারা এ মাসের শুরুতে নিউইয়র্কে ফিফার শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিল।
মন্তব্য করুন