ফুটবলের মূল কক্ষপথ থেকে অনেকটা ছিটকে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। টানা ২৮ বছর জেতা হয়নি কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা। বিশ্বকাপ জয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩৬ বছর। টানা ব্যর্থতায় অভিমানে জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়ে ফেলেছিলেন দলের সেরা তারকা লিওনেল মেসি।
প্রথমে অভিমান ভাঙিয়ে দলে ফেরান মেসিকে। সব শিরোপা জিতিয়ে কক্ষপথে ফেরানোর কাজটা যথাযথই পালন করেছেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। এবার শুরু হয়েছে তার বিদায়ের গুঞ্জন। নিজেই দিয়েছেন সেটি। আর এই সুযোগটাই নিতে চাইছে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ।
স্প্যানিশ গণমাধ্যমে স্পোর্তর বরাত দিয়ে আর্জেন্টাইন গণমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস জানিয়েছে, স্কালোনিকে পেতে ঝোপ বুঝে কোপ দিতে চায় রিয়াল মাদ্রিদ। চলতি মৌসুম শেষে রিয়ালের ডাগ আউটে আর দেখা যাবে না কার্লো আনচেলত্তিকে। তার জায়গায় আর্জেন্টাইন কোচের প্রতিই আগ্রহ দেখাচ্ছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
স্প্যানিশ গণমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, এরই মধ্যে বিশ্বজয়ী এই আর্জেন্টাইনকে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আনার জন্য স্কালোনির সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছে যাচ্ছে ইউরোপের সফলতম ক্লাবটির কর্তৃপক্ষ। এদিকে আর্জেন্টাইন গণমাধ্যমগুলোর দাবি, কোচের সব কাজে সবক্ষেত্রে খবরদারি করছেন আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাপিয়া। এতে ব্যাঘাত হচ্ছে সঠিক পরিকল্পনা সাজাতে।
গণমাধ্যমগুলোর দাবি বিশ্বকাপ জয়ের আগে দল নিয়ে কোনো মাথা ঘামাতেন না তাপিয়া। কিন্তু বিশ্বকাপ জয়ের পর সব আলো যখন লিওনেল মেসি এবং কোচিং স্টাফদের ওপর পরে, তখন লাইমলাইটে আসতে কোচদের কাজে হস্তক্ষেপ শুরু করেন তাপিয়া।
এমনকি কোচদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর কথা থাকলেও, এর কিছুই করেননি। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে উরুগুয়ের বিপক্ষে হারের পর ড্রেসিংরুমে স্কালোনির সঙ্গে তর্কে জড়ান তাপিয়া। হারের দায় কোচের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করেন ফেডারেশনের প্রধান।
আর্জেন্টিনার ফুটবলপ্রধান বোধ হয় অতীতটা ভুলে গেছেন। নাকি ইচ্ছে করে স্বর বদলে দিয়েছেন। কারণ দলের জন্য স্কালোনি কী করেন তা, এত দ্রুত ভোলার কথা নয় ক্লদিও তাপিয়ার।
২০০৪ থেকে ২০১৮, এই ১৪ বছরে সর্বমোট আটজন কোচ বদলেছে আর্জেন্টিনা। এক বছর করে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনজন। দুই বছর করে আর্জেন্টিনার প্রধান কোচের চেয়ারে বসে চারজন। আর সর্বোচ্চ তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন ২০১৪ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে নিয়ে যাওয়া আলেহান্দ্রো সাবেলা।
স্কালোনি ৫ বছর ধরে সামলাচ্ছেন আলবিসেলিস্তেদের দায়িত্ব। কিন্তু কয়দিন আর তাকে দেখা যাবে এই ভূমিকায় সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। আগামী বছর জুনে বসবে কোপা আমেরিকার আসর। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচ আরও পরে, সেপ্টেম্বরে। ততদিন কি থাকবেন স্কালোনি? আর রিয়াল মাদ্রিদের মতো বড় ক্লাবের কাছ থেকে প্রস্তাব পেলে তা না মেনে থাকতে পারবেন কি না সেটি দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন