আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে এশিয়ার দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা। তবে এবার দাবি সম্পূর্ণ ভিন্ন। গত বছর দেশটিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শত শত শিক্ষার্থী। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ বুধবার রাজধানী কলম্বোয় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে তাদের ওপর টিয়ারগ্যাস ও গরম জল নিক্ষেপ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আলজাজিরার প্রতিনিধি মিনেল ফার্নান্দেজ কলম্বো থেকে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার সরকার। ফার্নান্দেজ বলেন, ‘বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলেছেন, রাজনৈতিক নিপীড়নের উদ্দেশ্যে কয়েক ডজন ছাত্র ও আন্দোলনকারীকে কারাবন্দি করে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। সরকারের এ ধরনের দমন-পীড়ন তাদের থামিয়ে রাখতে পারবে না।’
আলজাজিরার প্রতিনিধির কাছে শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘সরকারের কৌশল হলো জনগণকে দমন ও তাদের কণ্ঠ রোধ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন বন্ধ করা, যে আন্দোলনের কারণে গত বছর সরকারের পরিবর্তন ঘটেছে। আমরা এটি কোনোভাবেই হতে দেব না।’
গত বছর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে যাওয়ায় খাদ্য ও জ্বালানির দাম ব্যাপক হারে বৃদ্ধির জেরে অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে শ্রীলঙ্কা। ভয়াবহ অর্থনৈতিক এ সংকটের জন্য ক্ষমতাসীন সরকারকে দায়ী করে এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ। জনগণের টানা আন্দোলনের মুখে একসময় প্রথমে মালদ্বীপ ও পরে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।
এদিকে, বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা দেখছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ-এর কাছ থেকে বেল আউট পাওয়ায় গত নয় মাসে দেশটির অর্থনৈতিক সংকটের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও বর্তমানে তা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও।
মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেহেলিয়া রামবুকওয়েলা বলেছেন, চলতি বছর শ্রীলঙ্কার রুপির মান প্রায় ২৪ শতাংশ বেড়েছে। সে কারণে সরকার ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ৬০টি ওষুধের দাম কমানোর সুযোগ পেয়েছে। গত বছর শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ সংকুচিত হলেও চলতি বছরে তা ৩ শতাংশ হতে পারে বলে প্রত্যাশা করছে আইএমএফ।
মন্তব্য করুন