বেশ কয়েক মাস ধরেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও সেনাপ্রধান ভ্যালেরি জালুঝনির মাঝে দ্বন্দ্ব চলছে। তাদের এই দ্বন্দ্বের মাঝে সম্প্রতি নতুন মাত্রা যোগ হয়। কিয়েভে ডানা মেলতে থাকা নানা জল্পনা-কল্পনা। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধরত দেশটির রাজধানীর বাতাসে খবর ছড়িয়ে পড়ে সেনাপ্রধান জালুঝনিকে সরিয়ে দিচ্ছেন জেলেনস্কি। এতদিন এই খবর শুধু গুঞ্জন হিসেবে থাকলেও এবার এটাই সত্য হচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
এ বিষয় সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্রের বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, গত সোমবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে সেনাপ্রধান জালুঝনির সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেলেনস্কি। এই বৈঠকে তাকে সেনাপ্রধানের পদ থেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়ে দেন প্রেসিডেন্ট। তবে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি। ফলে জালুঝনি এখনো সেনাপ্রধানের পদে রয়েছেন। কিন্তু এখনই ঘোষণা না এলেও চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে জেলেনস্কি প্রেসিডেনশিয়াল ডিক্রি জারি করতে পারেন। এই আদেশ জারি হয়ে গেলে যুদ্ধ শুরুর পর এটাই হবে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ রদবদল।
অবশ্য সোমবার জেলেনস্কির মুখপাত্র সেরহি নাইকিফোরভ গণমাধ্যমকে বলেছেন, সেনাপ্রধানের বরখাস্তের গুঞ্জন অসত্য। একই কথা জানানো হয় দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকেও। তবে একটি সূত্র মতে, সোমবার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে ছোট এক বৈঠকে জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি সেনপ্রধানকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এ সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে একদম শান্তভাবে জেলেনস্কি জালুঝনিকে সেনাবাহিনীর অন্য পদ প্রস্তাব করেন। তবে জালুঝনি তার এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ বিষয়ে কথা বলতে বুধবার ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে যোগাযোগ করে সিএনএন। তবে তারা কোনো সাড়া দেয়নি।
গত বছর রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা শুরু করে ইউক্রেনীয় সেনারা। তবে এই হামলায় তেমন সুবিধা করতে পারেনি জেলেনস্কি বাহিনী। এ নিয়ে মতবিরোধের মাঝেই নভেম্বরে ইকোনমিস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল জালুঝনি বলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ অচলাবস্থায় চলে গেছে। তার এমন মন্তব্যের জেরে জেলেনস্কির সঙ্গে দূরত্ব আরও বাড়ে। এ ছাড়া সেনা নিয়োগ নিয়েও দুজনের মাঝে যথেষ্ট বিবাদ রয়েছে।
অবশ্য এত কিছুর পরও জালুঝনি ইউক্রেনের অন্যতম জনপ্রিয় নেতা। এমনকি জনমত জরিপে জেলেনস্কির চেয়েও এগিয়ে তিনি। গত ডিসেম্বরে কিয়েভ ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির প্রকাশিত এক জরিপে দেখা গেছে, ৮৮ শতাংশ ইউক্রেনীয় নাগরিক জালুঝনিকে সমর্থন করেন। অন্যদিকে জেলেনস্কিকে সমর্থন করেন মাত্র ৬২ শতাংশ মানুষ।
মন্তব্য করুন