গাজা অভিমুখী আন্তর্জাতিক নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ইসরায়েলের ঘোষিত ‘বিপৎসীমায়’ প্রবেশ করেছে। গাজার উপকূল থেকে প্রায় ৩৭০ কিলোমিটার বা প্রায় ২০০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে এই নৌবহরটি। এতে অংশগ্রহণ করছেন পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিকভাবে সক্রিয় মানবাধিকার কর্মীরা। তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের হুমকির কারণে যে কোনো মুহূর্তে নৌবহর বাধার মুখে পড়তে পারে।
কারণ ইসরায়েলি সেনারা তাদের নৌ কমান্ডো ইউনিট ‘শায়েতেত ১৩’-কে প্রস্তুত অবস্থায় রেখেছে এবং হুমকি দিয়ে বলেছে, নৌবহর গাজার জলসীমায় প্রবেশ করা মাত্রই সামরিক অভিযান চালিয়ে জাহাজগুলোকে আটক করা হবে। এজন্য এই কমান্ডো ইউনিট ইতোমধ্যে সমুদ্রে জাহাজ আটকানোর মহড়াও দিয়েছে।
তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নৌবহরের সব জাহাজে অংশগ্রহণকারীরা অবস্থান করছেন এবং যাত্রা এখনো অব্যাহত রেখেছেন। জাহাজগুলোতে মানবিক সহায়তা বহন করা হচ্ছে। এতে খাবার, চিকিৎসাসামগ্রী এবং অন্যান্য জরুরি সরঞ্জাম রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
নৌবহরের একটি জাহাজে থাকা ক্রোয়েশিয়ার আইনজীবী মোরানা মিলজানোভিচ জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক জলসীমা বা অন্য দেশের আঞ্চলিক জলসীমায় বেসামরিক জাহাজ আটকানোর কোনো অধিকার ইসরায়েলের নেই। তিনি বলেন, ‘এটি আন্তর্জাতিক প্রচলিত আইনের বিষয়। কোনো রাষ্ট্রই সাধারণ আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে বেসামরিক নৌবহরকে চাইলেই আটকাতে পারে না।’
মিলজানোভিচ আরও বলেছেন, ‘ইসরায়েল কেবল তখনই আটকাতে পারে, যদি কোনো অপরাধ সংঘটনের আশঙ্কা থাকে বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য প্রমাণিত হুমকি থাকে। এখানে এমন কোনো প্রমাণ নেই। চারপাশের নৌবহরে প্রতিটি নৌযানে মানবিক সহায়তা হিসেবে খাবার ও অন্যান্য জরুরি সামগ্রী বহন করছে।
নৌবহরটি গাজার উপকূলে পৌঁছানোর মাধ্যমে মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সচেতন করার লক্ষ্য নিয়েও এগোচ্ছে। অংশগ্রহণকারীরা বলেছেন, গাজার বর্তমান সংকটের প্রতিবাদ এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য তারা এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, এই উদ্যোগ বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজর কাড়ার পাশাপাশি ইসরায়েলি নীতি এবং মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে। কারণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনী বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে।
মন্তব্য করুন