ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় দিয়েছেন জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)। রায়ে অবিলম্বে ইসরায়েলি হামলা বন্ধ না করার কথা বললেও গাজায় গণহত্যা প্রতিরোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে ইসরায়েলকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিশ্ব আদালতের এই রায়কে আন্তর্জাতিক আইনের শাসনের ‘চূড়ান্ত বিজয়’ বলে অভহিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় দুপুরে নেদারল্যান্ডের হেগ শহরে অবস্থিত আইসিজে এই রায় দিয়েছেন। দ্রুত রায়ের জন্য আদালতকে ধন্যবাদ জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটি বলছে, তারা আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের প্রত্যাশা, আদালতের আদেশের ব্যত্যয় হয় এমন কাজ ইসরায়েল করবে না।
দক্ষিণ আফ্রিকা আরও বলেছে, এতদিন ফিলিস্তিনি জনগণ যে ন্যায়বিচারের খোঁজ করছিল সে ক্ষেত্রে আদালতের এ রায় একটি বড় ধরনের মাইলফলক হয়ে থাকবে। এ ছাড়া গাজার ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষায় বৈশ্বিক বিভিন্ন ফোরামে কাজ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এর আগে গত ডিসেম্বরে গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিজেতে মামলাটি করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ মামলার ওপর চলতি মাসের শুরুর দিকে আইসিজেতে দুদিনের শুনানি হয়।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকা আন্তর্জাতিক আদালতের কাছে ৯টি আরজি জানিয়েছে। গাজায় সব ধরনের সামরিক কার্যক্রম বন্ধের পাশাপাশি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ স্বাভাবিক রাখতে ইসরায়েলকে নির্দেশ দেওয়ারও অনুরোধ জানায় দেশটি।
শুনানিতে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়, আদালত যেন জরুরি ভিত্তিতে ইসরায়েলকে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেন। গণহত্যা কনভেনশনের আওতায় ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক আদালতের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ ঘোষণা করা জরুরি বলেও উল্লেখ করা হয়।
আইসিজেকে বিশ্ব আদালত নামেও পরিচিত। এটি জাতিসংঘের একটি দেওয়ানি আদালত। সদস্যভুক্ত এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের বিরোধের বিচার করে এই আদালত। তবে এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) থেকে আলাদা। আইসিসি যুদ্ধাপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার করে থাকে। জাতিসংঘের সদস্য হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইসরায়েল—দুই দেশই দুই আদালতের রায় মেনে চলতে বাধ্য। তবে রায় মানার জন্য কোনো দেশের তেমন বল প্রয়োগ করতে পারেন না আইসিজে।
মন্তব্য করুন