গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতকামীদের সংগঠন হামাস। দলটির এমন সিদ্ধান্তে উৎসবে মেতেছে গাজাবাসী। সোমবার (০৬ মে) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা হামাসের যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হওয়ার সংবাত শুনে উচ্ছ্বাসিত। রাফাহ সীমান্তে আসন্ন স্থল অভিযানের আশঙ্কার সময়ে হামাস এ প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে।
গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা তারেক আবু আজম আলজাজিরাকে বলেন, আমরা আশা করি আল্লাহ এটি সহজ করে দেবেন এবং আমরা আমাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারব।
অপর এক ফিলিস্তিনি বলেন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যে তারা রাফাহ আক্রমণ করেনি। যারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং গাজার পাশে দাঁড়িয়েছেন আমরা তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।
আরেক ফিলিস্তিনি বলেন, আমরা একটি রাজনৈতিক সমাধান চাই, শুধু সামরিক সমাধান নয়। তিনি বলেন, এর জন্য আমাদের অবশ্যই ইসরায়েলি দখলদারিত্ব থেকে স্বাধীনতা পেতে এবং গাজা ও পশ্চিম তীরে আগ্রাসন বন্ধ করতে সংগ্রাম করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখতে চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অভিযান বন্ধ করুক। আমরা আমাদের বাড়িতে ফিরে যেতে চাই। আমাদের পরিবারগুলি খুব ব্যাথিত অবস্থায় রয়েছে। তবে আজ সন্ধ্যায় এই ঘোষণার পরে আমরা আমাদের বেশিরভাগ লোককে খুশি দেখতে পাচ্ছি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পর সেন্ট্রাল গাজার আল আকসা হাসপাতালের বাইরে মানুষ উল্লাস করছে। এ সময় শিশুরা আনন্দে লাফিয়ে উঠে এবং স্থানীয়রা গান গেয়ে এবং হাঁড়ি-পাতিলের শব্দ করে এটি উদযাপন করে।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাতদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।
অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
মন্তব্য করুন