মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাবশালী দেশগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতেই রয়েছে সৌদি আরব। আর ধর্মীয় কারণেও বিশ্বের মুসলিমদের কাছে সৌদি আরবের অন্য রকম গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু কয়েকশ’ কিলোমিটার দূরে যখন মুসলিম ভাইবোনদের নির্বিচারে হত্যা করছে ইসরায়েল- তখন সংঘাত বন্ধে বিবৃতি দেওয়া ছাড়া কার্যত আর কোনো পদক্ষেপই নেয়নি সৌদি আরব। এবার সেই দেশটি ইসরায়েলকে স্বীকৃতির ইঙ্গিত দিল।
সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বিন আবদুল্লাহর বক্তব্যে এ ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। বলা হচ্ছে, দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান ফিলিস্তিনের কল্যাণেই বাস্তবায়ন করা হোক।
সৌদি প্রেস এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বিন আবদুল্লাহ এপ্রিলের শেষের দিকে আরব লীগের রিয়াদ বৈঠকে এবং রোববার অনুষ্ঠিত মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, দ্বিরাষ্ট্র সমাধান এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তার ভিত্তি। ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ঐকমত্যের লক্ষণ রয়েছে। মন্ত্রী পর্যায়ের কমিটির লক্ষ্য গাজার পরিস্থিতি মোকাবিলা করা এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এগিয়ে নেওয়া।
প্রিন্স ফয়সাল আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত। গাজার মানবিক পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হচ্ছে। সেখানকার অবস্থা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রিন্স ফয়সাল ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য নরওয়ে, স্পেন ও আয়ারল্যান্ডের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলো একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে।
নরওয়ের কাছে সৌদি গাজা উপত্যকার সংকটময় পরিস্থিতি তুলে ধরেছিল বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।
এ ছাড়া সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন মানাতে বাধ্য করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এতে ইসরায়েল বুঝবে- তারা দায়বদ্ধতা থেকে মুক্ত নয় এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র ‘গোপন চুক্তি’র বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদি আরবের মার্কিন অস্ত্র কেনা নিয়ে পর্দার পেছনে দর কষাকষি চলছে। তা হচ্ছে ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরব সম্পর্ক স্থাপন।
এখন বাইডেন প্রশাসন যদি অস্ত্র বিক্রির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়, তাহলে এর মানে দাঁড়াচ্ছে, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে রাজি হয়েছে রিয়াদ। দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান এরই ইঙ্গিত দেয়। আর যদি এমনটা ঘটে, সেটি ফিলিস্তিনিদের জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল হবে।
মন্তব্য করুন