মিঠু দাস জয়, সিলেট
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১১:২৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘মা এখনো জানে না, গুলিতে আমি চোখ হারিয়েছি’

আব্দুস সালাম টিপু। ছবি : কালবেলা
আব্দুস সালাম টিপু। ছবি : কালবেলা

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল করতে গিয়ে চোখসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলিতে ছাত্র আন্দোলনের কর্মী আব্দুস সালাম টিপু আহত হয়েছেন। অথচ এখনও তার মা জানে না, গুলিতে টিপুর চোখ হারিয়েছে। সম্প্রতি কোটা আন্দোলন ঘিরে প্রায় মাসব্যাপী ছাত্ররা রাজপথ থেকে দাবি-দাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে একের পর এক।

সেই আন্দোলনে সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রসমাজ ও সাধারণ সচেতন মহল রাজ পথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। আর সেই সংগ্রামের শরিক হতে গিয়ে ১০ জনের প্রাণহানিসহ বহু মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। তার মধ্যে আব্দুস সালাম টিপু একজন ছিলেন। কালবেলার সঙ্গে কথা হয় আব্দুস সালাম টিপুর। তিনি জানান, গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) সিলেট কালেক্টরেট মসজিদ থেকে জুমার নামাজ শেষে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠন সিলেট নগরের বন্দরবাজার, মধুবন সুপার মার্কেটের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। পুলিশ মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করতে মিছিলের পেছন দিক থেকে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল, টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিলটি ঘুরে দাঁড়ালে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।

জানা যায়, এ সময় পুলিশ মধুবন সুপার মার্কেটের ডায়বেটিস গলির ঠিক ১০০ হাত দূর থেকে গিয়ে আন্দোলনকারীদের উপর গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। পুলিশের ছোঁড়া দুটি রাবার বুলেট টিপুর এক চোখে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রবেশ করে। পরে সাধারণ ছাত্র-জনতা টিপুকে উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী একটি বাসায় নিরাপদে নিয়ে যান। সেখান থেকে ৩০ মিনিট পর তাকে সিলেট উইমেন্স মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানোর জন্য মাউন্ট এডোরা হাসপাতাল নিয়ে যান। সেখানে চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না পেলে নর্থ ইস্ট ক্লিনিকে যান। সেখানেও না পেলে তিনি সিলেট আই সেন্টারে যান। শুক্রবার থাকার কারণে সেটিও বন্ধ ছিলো। পরে তিনি সিলেট লামাবাজার মেরিস্টোপ সেন্টারে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখান। ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে ঢাকা ভিশন আই হসপিটাল রেফার্ড করেন।

আরও জানা যায়, সেদিনই ফ্লাইটে করে তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় চলে যান। তাকে ঢাকা বিমানবন্দরে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার মুক্তাদির ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি কাইয়ূম চৌধুরীসহ নেতাকর্মীরা রিসিভ করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে তার চোখে একটি অপারেশন করা হয়। তার চোখে আরো অপারেশন দরকার। তাই ডাক্তাররা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের একটি চক্ষু হাসপাতালে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। ছাত্র আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠন ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনের মাঠে নামে। টিপু সিলেট মদন মোহন কলেজের অর্নাসের সাবেক শিক্ষার্থী ও সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেকসহ সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বালাগঞ্জ উপজেলার ফুজগিপুর গ্রানের মৃত মাহমুদ আলীর ছেলে।

এ বিষয়ে স্বাক্ষাতে ছাত্র আন্দোলনের কর্মী টিপু কালবেলাকে বলেন, আমার মা এখনও জানেন না-পুলিশের গুলিতে আমার এক চোখ নষ্ট হওয়ার পথে। মা যাতে ভয় না পায় তাই দ্রুত উন্নত চিকিৎসা নিতে ভারতে চেন্নাইয়ে যাচ্ছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাংবাদিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, থানার সামনেই ঘুরছে আসামিরা

স্ট্যানফোর্ডের পিএইচডি ছেড়ে ব্যবসায় নেমেছিলেন আজকের ইলন মাস্ক

রোমাঞ্চকর জয়ের পর আইসিসি থেকে সুখবর পেলেন মিরাজরা

এক প্রতিভাবান নির্মাতার ট্র্যাজিক জীবন

এই ১২টি ছাড়া বিএনপির নামের সব সংগঠন অবৈধ

টানা ৫ দিন বৃষ্টি আভাস, সন্ধ্যার মধ্যে যেসব জেলায় হতে পারে ঝড় 

চায়না দুয়ারি জালে বিপন্ন মৎস্য ও জীববৈচিত্র্য

ভিমরুলের কামড়ে হাসপাতালে ৩ শিশু

রাজধানীর খিলগাঁওয়ে কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

সংস্কার বিষয়ে বিএনপির আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই : ফখরুল

১০

স্থানীয়দের মাথাব্যথা সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

১১

চান্দিনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি রণবীর, সম্পাদক মাসুদ

১২

সুপারিশের বেড়াজালে ডাকসুর নির্বাচন কমিশন 

১৩

মেসির জোড়া গোলে মায়ামির দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন

১৪

আবর্জনার স্তূপে পোড়ানো হলো ভারতের পতাকা, ভিডিও ভাইরাল

১৫

অনিন্দ্যসুন্দর বিরল পাখি জলময়ূর

১৬

কাতারে প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে ইসরায়েল

১৭

মালয়েশিয়া থেকে ফেরত আসা কেউ জঙ্গি নয় : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৮

তিন বিভাগে অতি ভারি বর্ষণ, পাহাড়ধসের শঙ্কা

১৯

তিন দিন পর যুবকের মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ

২০
X