দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:১৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গুলিতে পা হারানো ইমরানের চিকিৎসা অর্থাভাবে বন্ধ

আন্দোলনে পা হারানো ইমরান। ছবি : কালবেলা
আন্দোলনে পা হারানো ইমরান। ছবি : কালবেলা

দুই বছরের ছোট্ট শিশু ফাতেমা বাবার ভালোবাসা পেতে বারবার কোলে উঠতে চায়। কিন্তু আন্দোলনে পা হারানোর কারণে মেয়েকে কোলে নিতে পারে না ইমরান হোসেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় পায়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। ইমরান রাজশাহী পুঠিয়ায় শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে।

তিনি ঢাকায় ‘টপওয়ান’ নামে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। কাজ শেষে সন্ধ্যা ৭টার সময় ঢাকা মিরপুর-১১ থেকে গাড়ি না পেয়ে হেটে বাড়ি ফেরার পথে মিরপুর ১০ নম্বরে পুলিশের ছোড়া গুলি লাগে ইমরানের ডান পায়ে। গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যা ৭টার সময় ছাত্র জনতার আন্দোলনে এ ঘটনা ঘটে।

মিরপুর ১০ নম্বরে গুলি লাগলে পড়ে থাকা ইমরানকে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে কয়েকজন মিরপুরের আলোক হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক মাসের বেশি সময় ধরে চিকিৎসাসেবা নিয়েও বাঁচানো যায় নি ইমরানের পা। অবশেষে কেটে ফেলতে হয়েছে।

এদিকে গত প্রায় ২০দিন আগে ইমরানকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ায় চলে গেছেন বাসায়। বাসায় গিয়ে সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ইমরানের এমন পরিস্থিতিতে চলছে না সংসার। বন্ধ আছে তার চিকিৎসাসেবাও। এতদিন ধার দেনা করে চিকিৎসা চালালেও এক পা হারিয়ে পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন ওই পরিবার।

ইমরানের বাবা সোহরাব আলী বলেন, আমার ছেলে আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে পা হারিয়েছে। আমার সংসার শেষ হয়ে গেছে। আমার ছেলের জীবন বাঁচাতে আপনারা সবাই সহায়তা করে চিকিৎসা নিতে সহায়তা করেন।

ইমরান হোসেন বলেন, ১৯ জুলাই বাইরে আন্দোলন চলছিল বিষয়টা আমি বুঝতে পারিনি। অফিস শেষ করে সন্ধ্যা ৭টায় মিরপুর-১১ থেকে গাড়ি না পেয়ে হেঁটে মিরপুর-১০ নম্বরে পৌঁছাতেই দেখি ছাত্ররা আন্দোলন করছে। এ সময় হঠাৎ মনে হলো আমার পায়ে কেউ যেন ইটের টুকরা দিয়ে আঘাত করল কিছুক্ষণ পর দেখি রক্তে ভিজে গেছে।

তিনি বলেন, পরে বুঝতে পারলাম পায়ে গুলি লেগেছে এবং আমার সামনেও আরও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি। ঢাকায় চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন এখানে আমার সংসারও চলছে না আবার চিকিৎসা সেবাও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে আছে। এতদিন কাছে থাকা কিছু টাকা ও ধার দেনা করে চিকিৎসা চালিয়েছি এখন আর পারছি না। চিকিৎসা চালাতে পুঠিয়া ইউএনও বরাবর একটি সহায়তার জন্য আবেদনও দিয়েছি। আমি বাঁচতে চাই আমাকে আপনারা বাঁচান।

ইমরান হোসেন বলেন, আমি ভাবতে পারি না যে আমার পা নেই। মাঝে মধ্যে ঘুম থেকে চিৎকার দিয়ে উঠে বসি। আমার হাত যখনই ডান পায়ের দিকে যায় তখন আমার কষ্টে বুকটা ফেটে যায়। এখন পর্যন্ত কেউ আমাকে দেখতেও আসেনি, কোন চিকিৎসা সেবাও দেয়নি। আমি চাই আমাকে সরকার সহযোগিতা করুক। তা না হলে আমার ভবিষ্যৎ জীবনে স্ত্রী ও দুই সন্তান এবং অসহায় বাবাকে নিয়ে দিন পার করা খুব কঠিন হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে পুঠিয়া ইউএনও নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, একটি মানবিক সাহায্যের আবেদন পেয়েছি এবং ডিসি অফিসে পাঠিয়েছি। সরকার বর্তমানে শহীদদের তালিকা করছেন। পরবর্তীতে আহতদের তালিকা করার সময় বিষয়টি দেখা যাবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মালদ্বীপে বিজয় দিবসের উপলক্ষে ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

আজ ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়

ঘন কুয়াশায় পদ্মার চরে আটকে পড়া লঞ্চের শতাধিক যাত্রী উদ্ধার

শহীদ হাদি হত্যার বিচার দাবিতে শাহবাগে রাতভর থাকার ঘোষণা

ছেলের অটোরিকশা থেকে পড়ে ট্রাকচাপায় মায়ের মৃত্যু

ঘন কুয়াশায় যমুনা নদীতে নৌকা আটকা, আতঙ্কে বরযাত্রীসহ ৪০ যাত্রী

সুবর্ণচরে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

মালিকানা জটিলতায় থাকা চট্টগ্রামের কাছেই কুপোকাত নোয়াখালী

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্টে হামলা-ভাঙচুর

শনিবার শহীদ হাদির কবর জিয়ারত করবেন তারেক রহমান

১০

রাশেদ খানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

১১

শিবিরের নবনির্বাচিত সভাপতি-সেক্রেটারিকে নিয়ে জামায়াত আমিরের বার্তা

১২

মাদ্রাসায় বিস্ফোরণে উড়ে গেল দেয়াল

১৩

রাশেদের গণঅধিকার ছাড়া ও ধানের শীষে নির্বাচনের কারণ জানালেন নুর

১৪

জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানালেন তারেক রহমান

১৫

খুলনায় নির্বাচনে আচরণবিধি নিশ্চিতে নিয়োগ পেলেন ১৭ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট

১৬

বীর শহীদদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

১৭

ওসমান হাদির বোন নির্বাচনে আসবেন কিনা জানাল পরিবার

১৮

সড়কে ঝরল দুই কলেজছাত্রের প্রাণ

১৯

৫ লাখ সন্ন্যাসী নিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস ঘেরাওয়ের হুমকি শুভেন্দুর

২০
X