নারায়ণগঞ্জে নগর ভবনে হামলা চালিয়েছেন অটোরিকশাচালকরা। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ও বিজিবি গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সোমবার (১২ মে) বিকেলে শহরের নিতাইগঞ্জ সংলগ্ন নগর ভবন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রায় এক ঘণ্টা নগর ভবন অবরুদ্ধ করে রাখে হামলাকারীরা।
আহতরা হলেন- সিটি করপোরেশনের সুপারভাইজার সম্রাট ইসলাম, যানজট নিরসন কর্মী শাওন, লিটন, পলাশ, সিয়াম, শিমলাসহ ১০ জন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শহরে অটোরিকশা প্রবেশের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছিল অটোরিকশা চালকরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নগর ভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে তারা। এ সময় তারা বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও সিটি করপোরেশনের স্টাফ ও কর্মচারীদের মারধর করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও বিজিবি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে শহরের জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক নীরব রায়হান কালবেলাকে বলেন, সিটি করপোরেশনের অধীনে আমাদের কিছু শিক্ষার্থী যানজট নিরসনে সড়কে কাজ করে। এদিকে অটোরিকশাচালকদের শহরে প্রবেশে নিষেধ করা হলে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এর ধারাবাহিকতায় তারা স্টাফ ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আহতদের তারা নগর ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশের সহায়তায় আমিসহ শিক্ষার্থীরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে আনার সময় তারা সন্ত্রাসী স্টাইলে বাধা দেয়। মূলত অটোরিকশাচালকরা শহরে প্রবেশ করতে না পারার ক্ষোভ থেকে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক জমির মিয়া বলেন, চাঁদাবাজমুক্ত ও শহরের ভেতরে কোনো এলাকা পর্যন্ত অটোরিকশাগুলো ঢুকতে পারবে সেসব দাবি নিয়ে আমরা সিটি করপোরেশন অভিমুখে এসেছিলাম। তাছাড়া সিটি করপোরেশনের কর্মী চাঁদাবাজ সম্রাট অটোরিকশা থেকে বিভিন্ন অংশের চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে সে মারধর করে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, তারা সন্ত্রাসী কায়দায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে অনেকে গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী কালবেলাকে বলেন, শহরে অটোরিকশাচালকদের প্রবেশ করতে না দেওয়ায় তারা নগর ভবনে হামলা করেছে। এতে অনেকে আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই মুহূর্তে সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। এই ঘটনায় মামলা হবে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে শহরে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে মূল শহরে অটোরিকশা চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ করে জেলা প্রশাসন ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। শহরের প্রবেশপথগুলোতে অনুমোদনহীন অটোরিকশা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় চালকরা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন।
মন্তব্য করুন