চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার সরকারি উদ্যোগের বিরুদ্ধে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বন্দর শাখা। এ সময় তারা বিদেশি বিনিয়োগের ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে দেশের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ হারানোর শঙ্কা প্রকাশ করেন।
বক্তারা বলেন, এনসিটির বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে এবং বিদেশি অপারেটর না এনে দেশীয় অপারেটরদের মাধ্যমে এই টার্মিনাল পরিচালনা অব্যাহত রাখতে হবে। বিদেশি অপারেটর আসলে কর্মসংস্থান সংকুচিত হবে, দেশীয় ঠিকাদার ও অপারেটর প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বন্দরের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাবে।
রোববার (২৫ মে) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বন্দর ভবনের মূল ফটকের সামনে সংগঠনটি অবস্থান ধর্মঘট পালন করে।
চট্টগ্রাম বন্দর শ্রমিক দলের সহসম্পাদক মোজাহের হোসেন শওকত বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত এবং আধুনিকায়িত এনসিটি এখন সফলভাবে দেশীয় অপারেটর দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। বিদেশিদের হাতে তুলে দিলে দেশের স্বার্থ, শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ এবং বন্দরের কর্তৃত্ব সবই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
বন্দর শ্রমিক দলের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সরকার একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, শ্রমিকদের মতামত নেওয়া হয়নি এবং জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে কোনো গণশুনানি হয়নি।’
শ্রমিকদল নেতা সানোয়ার মিয়া বলেন, ‘এই টার্মিনাল এখন আয়বর্ধক একটি ইউনিট হিসেবে পরিচিত। এখানে উন্নত যন্ত্রপাতি ও দক্ষ দেশীয় শ্রমিকরা টার্মিনাল পরিচালনা করছেন। বিদেশি অপারেটর আনার প্রয়োজনীয়তা প্রশ্নবিদ্ধ।’
এ সময় সংগঠনটির দাবি না মানলে ভবিষ্যতে বন্দর ঘেরাও, ধর্মঘট ও বিভাগীয় সমাবেশসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
এদিকে রবিবার দুপুরে ক্যাপিটাল মার্কেট সাংবাদিক ফোরামের সিএমজেএফ টক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোকে চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগ ও পরিচালনার সুযোগ দিতে চাই। আমরা কাউকে বন্দরের মালিকানা দিচ্ছি না, আমরা চাই তারা বিনিয়োগ ও ম্যানেজমেন্টে অংশগ্রহণ করুক। ইতোমধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তিন বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে।’
মন্তব্য করুন