বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসাশিক্ষক আবতাব উদ্দিন ও তার ছেলে পুত্রবধূ রিভা আক্তারকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীমণ্ডপ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শাহজাহান আলী তার বাবা, স্ত্রী ও সন্তান রেখে সৌদি আরব অবস্থান করছেন। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা ও স্ত্রী সন্তান থাকতেন। ঘটনার দিন রাতের কোনো এক সময়ে বাড়ির দরজা ভেঙে একদল দুর্বৃত্ত বাড়িতে প্রবেশ করে তাদের হাত-পা ও মুখ বেঁধে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে বাড়ির আসবাবপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়।
ঘটনার সময় থাকা শাহজাহানের শিশু কন্যা জিয়ানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রেবেকা তাসনিম মালিহা (৮) সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে স্থানীয়দের জানালে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন।
নিহত আবতাবের খালাতো ভাই আমজাদ হোসেন বলেন, তিনি অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষক ছিলেন। এখন তিনি কৃষি কাজে ব্যস্ত থাকেন। তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় ছেলে শাহজাহান সৌদি প্রবাসী এবং ছোট ছেলে সিহাব পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। আমার ভাইয়ের সঙ্গে গ্রামের কারও তেমন বিরোধ ছিল না। তবে জমিজমাসংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা রয়েছে। এ ঘটনা থেকেও এ হত্যাকাণ্ড হতে পারে।
জিয়ানগর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, নিহত আবতাবের কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ ছিল না। তিনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন। কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তা বলা মুশকিল। তবে প্রশাসন তদন্ত করলেই ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন হবে।
দুপচাঁচিয়া থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম প্রবাসীর বাবা ও স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) হোসাইন মোহাম্মাদ রায়হান বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে এসে দুজনের লাশ পেয়েছি এবং পরিবারের ৮ বছরের জীবিত আরও একজন শিশুকে পেয়েছি। তার সঙ্গে এখনও কোনো কথা আমাদের হয়নি। তদন্ত করে জেনে শুনে কী ঘটনা তা জানাতে পারব। প্রাথমিক আমাদের ধারণা এটা একটা দস্যুতার ঘটনা।
মন্তব্য করুন