কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারকে (ইউপি) সালিশে না ডাকায় নারীকে মারধর করে শ্লীলতাহানির চেষ্টা ও স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে
বুধবার উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের নেতড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত মেম্বারের নাম মো. জাবেদ। তিনি একই গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে ও নিষিদ্ধ আ.লীগের কর্মী। সন্ধ্যায় তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার উপপরিদর্শক লিটন চাকমা।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ফ্যাসিস্ট আ.লীগের সময়ের চিওড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাবেদ টাকা খেয়ে বিচার আচার করেন এবং অসহায় লোকজনের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করেন ও নারীদের মারধর করে। গত ২-৩ মাস পূর্বে নেতড়া গ্রামের হাছিনা আক্তারের ছেলেদের মধ্যে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। তখন তার বড় ছেলে এলাকার প্রতিনিধি হিসেবে ইউপি মেম্বার জাবেদকে জানায়। পরে হাছিনা ও তার স্বামী হুমায়ন আত্মীয়স্বজনকে ছেলেদের বিষয়ে জানিয়ে পারিবারিকভাবে বসে বিষয়টি সমাধান করে। কিন্তু বড় ছেলে ইউপি মেম্বারকে পারিবারিক বিষয়ে না ডাকলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। ইউপি মেম্বার জাবেদ প্রায় সময় উসকানিমূলক কথাবার্তা বলে তাদের ক্ষতি সাধনের সুযোগ খুঁজতে থাকে।
এতে বলা হয়, এরই মধ্যে গত ২৩ ও ২৭ জুলাই হাছিনার দুই ছেলে প্রবাসে চলে যায়। বুধবার সকালে তিনি প্রতিদিনের মতো হাঁটতে বের হলে জাবেদ মেম্বার পূর্বশত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে গালমন্দ করতে থাকে। গালমন্দ করতে নিষেধ করায় জাবেদ উত্তেজিত হয়ে হাছিনার নাকে স্বজোরে ঘুসি দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে রাস্তায় ফেলে দেয়। এ ছাড়া হাছিনার শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালিয়ে গলায় থাকা ১ ভরি ২ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন টেনে নিয়ে যায়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হাছিনার চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় জাবেদের হাত থেকে রক্ষা করে। পরে তাকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জরুরি চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা না নিতে ইউপি মেম্বার ভুক্তভোগী নারী ও তার পরিবারের লোকজনকে প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী নারীর ভাই মো. শহীদুল্লাহ প্রকাশ মাহবুব জানান, ইউপি মেম্বার জাবেদ দীর্ঘদিন ধরে সালিশ বৈঠকের নামে মানুষ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করত। আমার বোনের পরিবার থেকে টাকা না পেয়ে হামলা ও শ্লীলতাহানি করেছে। আমি এর উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি মেম্বার ইউপি মেম্বার মো. জাবেদ বলেন, ‘হঠাৎ টাকাপয়সা হয়ে যাওয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। মারধর ও স্বর্ণের চেইন নেয়ার তথ্য সঠিক নয়’।
চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক লিটন চাকমা বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
মন্তব্য করুন