বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের কারণে কুয়াকাটায় বিরাজ করছে বৈরী আবহাওয়া। সমুদ্রে রয়েছে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত, ফুঁসে উঠছে সমুদ্র। এদিকে উত্তাল ঢেউয়ের মিতালীতে হাজারো পর্যটক মেতে উঠেছেন বাঁধভাঙা উল্লাসে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজার লম্বা ছুটি উপভোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পর্যটকে এখন মুখর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত। এরই মধ্যে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ হোটেল বুকিং সম্পন্ন হয়েছে। প্রাণ ফিরে পেয়েছে সৈকত এলাকা ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে টানা বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়া অনেক পর্যটকের ভ্রমণ আনন্দকে ম্লান করেছে।
বুধবার (১ অক্টোবর) থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি চললেও বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন পর্যটকসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দ্বীন ইসলাম বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটক আসায় বিক্রি মোটামুটি ভালোই ছিল। কিন্তু আজকের বৃষ্টির কারণে বিক্রি একেবারেই নেই।
অটোচালক কাদের হোসেন বলেন, সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে গাড়ি নিয়ে বের হতে পারছি না। পর্যটকরা কোথাও যাচ্ছে না। আশা করেছিলাম এ ছুটিতে কিছু আয় হবে, কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছে না।
পর্যটক মো. শাকিল বলেন, সৈকতে এসে ঢেউ না দেখে ফিরে যাওয়া যায় না। আবহাওয়া খারাপ হলেও ঢেউয়ের সঙ্গে মজা করছি। তবে অন্য দর্শনীয় স্পটে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
আরেক পর্যটক রিমি আক্তার বলেন, প্রথমবার কুয়াকাটায় এলাম। সমুদ্রের সৌন্দর্য দারুণ লাগছে; কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে অনেক জায়গায় যাওয়া হয়নি।
হোটেল মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল ফরাজী বলেন, দুর্গাপূজার টানা ছুটিতে কুয়াকাটা রেকর্ডসংখ্যক পর্যটকের আগমন হয়েছে। সৈকত লাগোয়া হোটেলগুলো শতভাগ বুকিং রয়েছে। এ ছাড়া আশপাশের হোটেলগুলো ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ বুকিং রয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে কিছু হোটেলের বুকিং ক্যানসেল হচ্ছে। কুয়াকাটা অবস্থানরত পর্যটকরা দূরের কোনো স্পটে যেতে পারছেন না।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোতালেব শরীফ বলেন, পর্যটন মৌসুমে হঠাৎ নিম্নচাপের কারণে বুকিং বাতিল হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক ভ্রমণপিপাসুরা আসতে চাইলেও আসতে পারছেন না। এতে হোটেল-মোটেলের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।
টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেছেন, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় সমুদ্রসৈকত ও আশপাশে টুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
মন্তব্য করুন