নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ধর্মীয় সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা সম্পন্ন হয়েছে। পূজামণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি নৌবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দিন-রাত কাজ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় শারদীয় দুর্গোৎসব।
হাতিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নে মোট ৩৩টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়। দেবীর বিসর্জনকে ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, যাতে ভক্তরা নির্বিঘ্নে ধর্মীয় আচার পালন করতে পারে। প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা, পাহারাদার এবং পুলিশের মোবাইল টিম নিয়োজিত ছিল। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত মনিটরিং ছিল চোখে পড়ার মতো। ফলে এ বছর কোনো ধরনের অশান্তি বা অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা জানান, গত কয়েক বছরে নিরাপত্তাজনিত কারণে কিছুটা উদ্বেগ ছিল। তবে এ বছর যৌথবাহিনীর সহযোগিতায় সবার মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছিল। পূজায় আগত হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্তরা আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী পূজা সম্পন্ন করতে পারায় উপজেলা প্রশাসন ও যৌথবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান।
অন্যদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল জানান, হাতিয়া একটি বহু ধর্মাবলম্বীর দ্বীপ। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ঐতিহ্যগতভাবে বজায় আছে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে মুসলিম, হিন্দুসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষ একে অন্যকে সহযোগিতা করেছে। শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনে প্রশাসন ও যৌথবাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় যুবক ও স্বেচ্ছাসেবীরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ফলে এ বছর হাতিয়ায় দুর্গাপূজা সত্যিকারের ধর্মীয় সৌহার্দ্য ও মিলনের উৎসবে পরিণত হয়েছে।
নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট হাতিয়া লে. সোয়েব রাফসান জানান, সারা দেশের মতো হাতিয়া নৌবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উৎসব পালনে সার্বক্ষণিক বিশেষ টহল অব্যাহত রেখেছে। ফলে এখানে অসাধু ও সুযোগসন্ধানীরা কোনো অপ্রীতিকর তৎপরতা দেখাতে সাহস করতে পারেনি। হাতিয়ায় শান্তি রক্ষার্থে নৌবাহিনী সর্বদা সজাগ রয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় প্রশাসন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। যৌথবাহিনীর টহল ও পাহারার কারণে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পূজা উদযাপন করতে পেরেছে।’
মন্তব্য করুন