আতাউর রহমান, ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ব্রাহ্মণপাড়ার দীর্ঘভূমি যেন পানকৌড়িদের কলোনি

দীর্ঘভূমি এলাকার একটি পুকুর পাড়ের ঝোঁপে বসে আছে কয়েকটি পানকৌড়ি। ছবি : কালবেলা
দীর্ঘভূমি এলাকার একটি পুকুর পাড়ের ঝোঁপে বসে আছে কয়েকটি পানকৌড়ি। ছবি : কালবেলা

সময়ের ব্যবধানে পানকৌড়ির সংখ্যা কমে গেলেও কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় দেখা গেছে উল্টো চিত্র। উপজেলা সদরের দীর্ঘভূমি এলাকার স্থানীয় কয়েকটি পুকুর পাড়ের গাছগুলোতে প্রতিদিনই জমে পানকৌড়ির মিলনমেলা। পুকুরের আশপাশের গাছ ও গ্রামের বিভিন্ন গাছে বসবাস করায় পুরো এলাকা হয়ে উঠেছে পানকৌড়ি কলোনি। এ দৃশ্য দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীও। তবে স্থানীয়রা বলছেন যতই শীত ঘনিয়ে আসছে ততই পানকৌড়ির সংখ্যাও কমে আসছে। গ্রীষ্ম মৌসুমে অতিথি পাখির মতো এই এলাকায় হাজার হাজার পানকৌড়ি এসে আবাসস্থল তৈরি করে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে বিগত কয়েক বছর ধরেই গ্রীষ্ম মৌসুমে পানকৌড়িগুলো এই এলাকায় এসে আশ্রয় নেয়। শীত এলেই পানকৌড়িগুলো কোথায় যেন চলে যায়। গ্রীষ্মের শুরুতেই পানকৌড়িগুলো ওই এলাকার পুকুর পাড় ও এর আশপাশের গাছগুলোতে তৈরি করে আবাসস্থল। সারা দিন পানকৌড়িগুলো পুকুরের জলে সাঁতার কাটে। একে অপরের সাথে খেলে জলকেলি। পুকুর ও আশপাশের জলাশয় থেকে মাছ শিকার করে নিজেদের ও পরিবারের খাদ্য সংগ্রহ করে। পানকৌড়িদের জলে ডুবসাঁতার ও ওড়াউড়ির দৃশ্য দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। যার ফলে ওই এলাকায় দিন দিনই বাড়ছে পাখিপ্রেমী ও বিভিন্ন বয়সের দর্শনার্থীদের সংখ্যা। পাখি শিকারি থেকে পাখিগুলোকে সুরক্ষা দিতে স্থানীয়রা পানকৌড়িগুলোর দিকে সুদৃষ্টি রাখছেন। স্থানীয়দের দাবি পানকৌড়িগুলো সংরক্ষণের।

স্থানীয় বাসিন্দা আলফু মিয়া বলেন, গরমকালে কেথা থেকে যেন পানকৌড়িগুলো এ এলাকায় আসতে শুরু করে, আবার শীত শুরু হতে না হতেই যেতে শুরু করে। তাদের উড়াউড়ি ও ডাকা ডাকিতে এই এলাকা মুখরিত হয়ে থাকে। অনেকেই আসেন এ দৃশ্য দেখতে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোখলেছুর রহমান বলেন, দাদা-দাদির কাছ থেকে শুনেছি কোনো এক সময় গ্রামবাংলার প্রায় প্রতিটি পুকুরের জলে পানকৌড়ি দেখা যেত। এখনতো সচরাচর পানকৌড়ি দেখাই যায় না। যে কারণে এখানে এত পানকৌড়ি একসাথে দেখে যে কেউ মুগ্ধ হয়ে যায়। প্রতিদিন অনেকেই আসে পাখিগুলোর দলবেঁধে উড়াউড়ি ও সাঁতার দেখতে। তবে শীত আসা শুরু করতেই অধিকাংশ পানকৌড়ি চলে গেছে। গ্রীষ্মকালে অসংখ্য পানকৌড়ি এই এলাকার গাছে গাছে ও পুকুর জলাশয়ের মধ্যে দেখা যেত।

স্থানীয় বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আমির হোসেন বলেন, পানকৌড়িরা তাদের প্রজননের সময়ে এই এলাকার গাছে গাছে বাসা বাঁধে। বাচ্চাগুলো স্বনির্ভর হয়ে উঠতে উঠতে হেমন্তকালের শেষ সময়ে এসে যায়। তখন একটু একটু শীত পড়তে শুরু করে। এরইমধ্যে পানকৌড়িগুলো এ এলাকা থেকে যেতে শুরু করে। মূলত প্রজনন ও বাচ্চাগুলে স্বনির্ভর হওয়া পর্যন্ত পানকৌড়িগুলো এ এলাকায় বসতি স্থাপন করে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. শঙ্খজিৎ বলেন, পানকৌড়ি একটি অতিপরিচিত পাখি। বাংলাদেশের হাওর অঞ্চলে তাদের বেশি দেখা যায়। তবে তুলনামূলকভাবে এই এলাকায় পানকৌড়ি সংখ্যা তেমন একটা নেই। আমাদের দেশ থেকে পাখি বিলুপ্ত হওয়ার প্রধান কারণ দিন দিন বন উজাড় হওয়া ও গাছগাছালি কমে যাওয়া। পাখিদের বিলুপ্তির হাত থেকে ধরে রাখতে হলে তাদের বসবাসযোগ্য অভয়াশ্রম তৈরি করে দিতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শহীদ মিনারে ফরিদা পারভীনের মরদেহে শ্রদ্ধা সকালে, কুষ্টিয়ায় দাফন

সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে বিএনপি মহাসচিবের শোক

বাংলাদেশে এখনো নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি : মামুনুল হক

বিএনপি একটি সুন্দর ও মানবিক রাষ্ট্র গড়তে চায় : মোস্তফা জামান 

শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনবে বিএনপি : আনোয়ার 

ফিলিস্তিনের পক্ষে জাতিসংঘে ভোট দিল ভারত

নির্বাচিত হলে দুই মাসে গ্যাস সুবিধা পাবে নাটোরবাসী : দুলু

‘এক বছরের সাফল্যগাঁথা : বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দূরদর্শী নেতৃত্ব’

মন্ত্রিপাড়ায় সন্দেহজনক ঘোরাঘুরি, মার্কিন নাগরিক গ্রেপ্তার

জাকসুতে কত ভোট পেল ছাত্রদলের ভিপি-জিএস প্রার্থী?

১০

বাংলাদেশ উইমেন জার্নালিস্ট ফোরামের নতুন কমিটি গঠন

১১

লঙ্কানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের অসহায় আত্মসমর্পণ

১২

জাতীয় প্রেসক্লাবে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও হেলথ কার্ড বিতরণ

১৩

মাছধরা ট্রলারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, ৩ জেলে অগ্নিদগ্ধ

১৪

তেঁতুলিয়ায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড

১৫

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যের আহ্বান কফিল উদ্দিনের

১৬

চার দফা দাবিতে সড়কে সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারীরা

১৭

নেইমারের ফিটনেস নিয়ে আনচেলত্তির দাবি নাকচ করল সান্তোস

১৮

মাত্র ৩ টাকায় সুস্বাদু রসগোল্লা

১৯

বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অঙ্গীকারবদ্ধ : নীরব

২০
X