রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-পাবনার নগরবাড়ী-সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নৌপথ। সেখানে নিয়মিত চলাচল করে বিভিন্ন পণ্যবাহী বহু কোস্টার জাহাজ। নদীর পানি কমে সেখানে পদ্মা ও যমুনার বুকে ছোট-বড় অনেক চর জেগে উঠেছে। চ্যানেলের বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবোচরের পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে নব্যতা সংকট। প্রয়োজনীয় পানির গভীরতা না থাকায় চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে ছেড়ে আসা মালবোঝাই জাহাজগুলো সরাসরি নগরবাড়ী ও বাঘাবাড়ী বন্দরে যেতে পারছে না। পথে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গিয়ে সেগুলো আটকা পড়ে থাকছে।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সেখানে আটকা পড়েছে কয়লা, ক্লিংকার সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল ও সার বোঝাই ১০টি জাহাজ।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় পদ্মা নদীতে নোঙর করে আছে এমভি গ্লোরি অব জয়া, এমভি শেখ এন্টারপ্রাইজ, এমভি জারফার, এমভি বন্ধন-৩, এমভি গোলাপ-৬, এমভি হোসনে আরা-৩, এমভি মোনাজাত, এমভি আব্দুল কাদের, এমভি আল-যামী ও এমভি সাহারা-২৩ নামের দশটি জাহাজ। সেখানে শতাধিক শ্রমিক বিভিন্ন জাহাজ থেকে কয়লা, ক্লিংকার সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল ও সার নামিয়ে বোলগেটে বোঝাই করছে। বোঝাইয়ের পর বোলগেটগুলো সেখান থেকে পাবনার নগরবাড়ী ও সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নৌবন্দর অভিমুখে দ্রুত ছেড়ে যাচ্ছে। এ সময় বিভিন্ন জাহাজের কয়েকজন চালক মাস্টার ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি কমে দৌলতদিয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌপথে অসংখ্য ডুবোচর ও নব্যসংকট দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে নৌ চ্যানেলের মোল্লার চর, ব্যাটারির চর, কানাইদিয়া, লতিফপুর, নাকালিয়া ও পেঁচাখোলা এলাকায় নাব্যতা সংকট সবচেয়ে বেশি। প্রয়োজনীয় পানির গভীরতা না থাকায় সেখানে ১০ থেকে ১৩ ড্রাফটের মালবোঝাই কোন জাহাজ চলাচল করতে পারছে না। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে ছেড়ে আসা পাবনার নগরবাড়ী ও সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী বন্দরগামী বিভিন্ন মালামাল বোঝাই ওই কোস্টার জাহাজগুলো গোয়ালন্দের দৌলতদিয়ায় এসে আটকা পড়েছে।
এদিকে মালামাল নামানোর কাজে সিরিয়াল মাস্টার মো. মনিরুদ্দিন সরদার বলেন, ‘ড্রাফট কমাতে জাহাজ থেকে মালামাল নামিয়ে বোলগেটে করে নগরবাড়ী ও বাঘাবাড়ী নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে সংশ্লিষ্ট মালের মালিকপক্ষকে বোলগেট ভাড়া ও লেবার খরচ বাবদ অতিরিক্ত টাকা গচ্ছা দিতে হচ্ছে।’
জাহাজ চলাচলে দৌলতদিয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌপথ চ্যানেল সচল রাখতে সেখানে দ্রুত খনন কাজ করা খুব জরুরি বলে তিনি জানান।
বিআইডব্লিউটিএ-এর আরিচা অঞ্চলের যুগ্ম পরিচালক নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালক আজগর আলী বলেন, ‘প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে দৌলতদিয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌপথ চ্যানেলের বিভিন্ন পয়েন্টে পানির গভীরতা কমে যায়। এতে সেখানে ৮ ড্রাফটের উপরে পণ্যবোঝাই কোনো জাহাজ চলাচল করতে পারে না।’ তবে, নাব্যতা সংকট মোকাবিলায় বিআইডব্লিউটিএ এর ড্রেজিং বিভাগ খননকাজের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন