অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত পেনশনসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে ‘বৈষম্যমূলক’ অভিহিত করে তা অতি দ্রুত প্রত্যাহারের দাবিতে মৌন মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষকরা।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বুয়েট শিক্ষক সমিতি আয়োজন করে এই কর্মসূচির।
এ সময় পেনশনসংক্রান্ত জারিকৃত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার ছাড়াও অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেল সংশোধন, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নতুন পেনশন ব্যবস্থাসংক্রান্ত যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতো আমরাও সেট ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। এটির নাম ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’। কিন্তু রাষ্ট্রের কিছু ব্যক্তিকে এক ধরনের, বাকিদের অন্যধরনের পেনশন ব্যবস্থার আনা কখনোই সর্বজনীন হয় না। সবার ক্ষেত্রে যদি এই পেনশন ব্যবস্থা প্রযোজ্য হতো, সেক্ষেত্রে আমাদের কোনো অভিযোগ ছিল না।
তিনি আরও বলেন, প্রজাতন্ত্রের কিছু কর্মচারীকে সংবিধানসম্মত সুবিধা প্রদান করা হবে এবং অন্যদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হবে, সেটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা মনে করি, এর মধ্য দিয়ে শিক্ষকসমাজের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। অনতিবিলম্বে এই পেনশনসংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপনটি প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি।
এর আগে, পেনশনসংক্রান্ত জারি করা প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার চেয়ে একটি বিবৃতি প্রদান করে বুয়েট শিক্ষক সমিতি। এতে বলা হয়, শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পেনশন স্কিম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে প্রচলিত পেনশন ব্যবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা অভ্যস্ত এবং আর্থিক বিষয়ে এক ধরনের নিরাপত্তা অনুভব করে। মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশাকে গ্রহণ করার জন্য এই পেনশনব্যবস্থা একটি অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।
নতুন পেনশন স্কিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণায় প্রভাব ফেলবে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বর্তমান পেনশন ব্যবস্থা বহাল রেখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সুবিধা কমানোর প্রচেষ্টার ফলে শিক্ষকদের মধ্যে এক ধরনের হীনম্মন্যতা তৈরি হবে। এটা বিবেচনা করা অপরিহার্য, মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ করা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ এবং নতুন এই পেনশন স্কিম মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় আসার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করবে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মানের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে এবং ফলস্বরূপ, সমগ্র জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মন্তব্য করুন