বহুল আলোচিত-সমালোচিত সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ বাতিল করে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই অধ্যাদেশে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩-এর ৯টি ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আগের আইনের বেশ কিছু ধারার মামলা, দণ্ড ও জরিমানা বাতিল করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার (২১ মে) আইন মন্ত্রণালয় এই অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ করেছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সাইবার নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন বিতর্কিত ধারা ও এর অপব্যবহারের কারণে আইনটি বাতিলের দাবি উঠেছিল। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে এই আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর গত ১ ডিসেম্বর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের ওয়েবসাইটে নতুন অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে মতামত চাওয়া হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রকাশিত প্রথম খসড়ায়ও কিছু ধারা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। সে অবস্থাতেই গত ২৪ ডিসেম্বর উপদেষ্টা পরিষদ তা অনুমোদন দেয়। পরে সমালোচনার মুখে অন্তর্বর্তী সরকার সেখানে আবারও কিছু সংশোধনী আনে।
সর্বশেষ ৬ মে উপদেষ্টা পরিষদ তা আবার অনুমোদন দেয়। সেদিন সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করতে বিভিন্ন পর্যায়ে পরামর্শ করে ২৫ বার খসড়া পরিবর্তন করা হয়েছে।
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে সাইবার নিরাপত্তা আইনের ধারা ২১, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩১ ও ৩৪ বাদ পড়েছে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, উল্লিখিত ধারাগুলোয় নিষ্পন্নাধীন কোনো মামলা বা অন্যান্য কার্যধারা ও তদন্ত বাতিল হবে এবং কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না। এ ছাড়া এসব ধারায় আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত দণ্ড ও জরিমানা বাতিল হবে।
বাদ পড়া ধারাগুলোয় ছিল—মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকা সম্পর্কে বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণার দণ্ড; পরিচয় প্রতারণা বা ছদ্মবেশ ধারণ; আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শন, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ; অনুমতি ব্যতীত পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ, ব্যবহার ইত্যাদির দণ্ড; মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার ইত্যাদি।
মন্তব্য করুন