ফিলিপাইনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রখ্যাত আগ্নেয়গিরি মায়ন থেকে লাভা উদগিরণ অব্যাহত থাকায় নিরাপত্তার শঙ্কায় প্রায় ১৩ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। লরি ও মহিষের টানা গাড়িতে চড়ে বাসিন্দারা নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন। আগ্নেয়গিরির চারপাশে ছয় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ‘স্থায়ী বিপদ অঞ্চল’ ঘোষণা করা হয়েছে।
মায়ন আগ্নেয়গিরিটি এর নিখুঁত মোচাকৃতির জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। কিছুদিন সুপ্ত থাকার পর গত সপ্তাহে এটি লাভা ছড়াতে শুরু করে।
তবে আগ্নেয়গিরির লাভা উদগিরণের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এক সপ্তাহ পর মানুষজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
দেশটির প্রধান আগ্নেয়গিরিবিদ টেরেসিটো বাকলকোল বলেছেন, মায়নের লাভা নিঃসরণের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে আরও বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের যে ৫ ধাপের সতর্কতা রয়েছে, এটি তার তৃতীয় ধাপে অবস্থান করছে। বর্তমানে এটিতে ধীরগতিতে লাভা নির্গত হচ্ছে। তবে যে কোনো সময় ভয়ংকর বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
মায়নের অবস্থান ফিলিপাইনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি কৃষি উপদ্বীপে। এটি সে দেশের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির মধ্যে একটি। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ঘন ঘন ভূমিকম্প এবং এর গর্ত থেকে পাথর পড়ার কারণে আগ্নেয়গিরিটি অস্থির হয়ে উঠেছে।
টেরেসিটো বাকলকোল স্থানীয় মিডিয়াকে বলেছেন, “আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে গ্যাস এবং জলন্ত শিলার গতিশীল স্রোত নামার ঝুঁকি রয়েছে। এই স্রোতগুলিকে অতিক্রম করা কঠিন হবে।”
ফিলিপাইনে ১৮১৪ সালে একটি অগ্ন্যুৎপাতে ১২০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল। আগ্নেয়গিরির জ্বলন্ত লাভার নিচে ডুবে গিয়েছিল পুরো একটি শহর।
২০০৬ সালে টাইফুন ডুরিয়ানের আঘাত হানার সময় আগ্নেয়গিরির জমাট বাঁধা লাভার ধ্বসে একটি সম্পূর্ণ গ্রাম মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। এঘটনায় মারা যায় প্রায় ২০০ মানুষ।
একই ভাবে ২০২০ সালে আগ্নেয়গিরির লাভা ধ্বসে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছিল।
এসব ঘটনার পর ফিলিপাইনে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনায় অনেক বেশি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
ফিলিপাইনে মোট ২৪টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির মধ্যে মায়ন অন্যতম। অগ্ন্যুৎপাতের লক্ষণ দেখা দেওয়ায় সাম্প্রতিক দিনগুলিতে সেদেশে আরও দুটি আগ্নেয়গিরির ‘তাল এবং কানলাওন, -কেও নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
মন্তব্য করুন