মাওবাদী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে ভারত। দেশটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ৩১ মাওবাদী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৬ মে) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী ছত্তিশগড় এবং তেলেঙ্গানার সীমান্তবর্তী কারেগুট্টালু পাহাড়ে দীর্ঘ ২১ দিন ধরে অভিযান চলিয়েছে। এ অভিযানে ৩১ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই সাফল্যকে ‘নকশালবাদের বিরুদ্ধে বৃহত্তম অভিযান’ বলে বর্ণনা করেছেন।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অমিত শাহ লিখেন, লাল সন্ত্রাসের যে পাহাড়ে একসময় তাদের আধিপত্য ছিল, আজ সেই পাহাড়ে তেরঙ্গা উড়ছে... আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী মাত্র ২১ দিনে এই বৃহত্তম অভিযান সম্পন্ন করেছে। সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হলো, এই অভিযানে আমাদের বাহিনীর কোনো সদস্য হতাহত হননি।
ভারত দীর্ঘদিন ধরে নকশালবাদী বিদ্রোহের অবশিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। ১৯৬৭ সালে নকশালপন্থি আন্দোলনের শুরু হয়েছিল, ভারতের মাওবাদী অনুপ্রাণিতরা একটি চরম বামপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
কারেগুট্টালু পাহাড় একসময় বিভিন্ন নকশাল সংগঠনের একীভূত সদর দপ্তর ছিল। এ অঞ্চলে বিদ্রোহীদের অস্ত্র এবং কৌশলগত প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে নিরাপত্তা বাহিনীর সফল অভিযানে এ এলাকায় তাদের প্রভাব কার্যত নির্মূল করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এই সাফল্যের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর এই সাফল্য প্রমাণ করে যে, নকশালবাদ নির্মূলের লক্ষ্যে আমাদের অভিযান সঠিক পথে অগ্রসর হচ্ছে। আমরা নকশালপ্রবণ এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়নের মূল স্রোতে যুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের মহাপরিচালক জিপি সিং বুধবার জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে নকশালবাদ নির্মূলের জন্য সরকার নিরবচ্ছিন্ন ও কঠোর অভিযান চালিয়ে যাবে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর থেকে এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনী প্রায় ৪০০ মাওবাদীকে হত্যা করেছে। সম্প্রতি ছত্তিশগড় এবং ঝাড়খণ্ডে ১১ মাওবাদী নিহত হয়েছেন। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে ১১ জন এবং মার্চ মাসে ৩০ বিদ্রোহীকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ২০২৫ সালের প্রথম চার মাসে ৭১৮ মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছে।
মন্তব্য করুন