

আত্মহত্যা করা ২৮ বছর বয়সী এক তরুণী চিকিৎসকের হাতে লেখা মৃত্যুনোটে নাম থাকা একজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তির নাম প্রশান্ত বঙ্কর, যিনি তরুণীর বাড়িওয়ালার ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার (২৫ অক্টোবর) তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
তবে মৃত্যুনোটে নাম থাকা অন্য অভিযুক্ত সাব-ইন্সপেক্টর গোপাল বাদান এখনও পলাতক, তাকে ধরার জন্য তল্লাশি চলছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মহারাষ্ট্রে। আজ সকালে পুলিশ সুপার তুষার দোশি এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুসারে, গত বৃহস্পতিবার রাতে সাতারার ফলটনের একটি হোটেল থেকে তরুণী চিকিৎসকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি বাঁ হাতের তালুতে শেষ বার্তা লিখে গিয়েছিলেন, যেখানে দু’জনের নাম উল্লেখ ছিল। অভিযোগ, সাব-ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তিনি একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন। এ ছাড়া প্রশান্ত বঙ্কর তাকে পাঁচ মাস ধরে শারীরিক ও মানসিকভাবে হয়রানি করেছিলেন।
তরুণী চিকিৎসক ফলটনের একটি সরকারি হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক ডাক্তার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অভিযোগ, তাকে নানা অনৈতিক কাজ করতে চাপ দেওয়া হতো, এমনকি ভুয়া মেডিকেল রিপোর্ট লিখতে বাধ্য করা হতো। একাধিকবার ডিএসপি এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়েও তিনি সাহায্য পেতে পারেননি। পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, তার চার পাতার চিঠি উদ্ধার হয়েছে, যেখানে ভুয়া রিপোর্টের জন্য চাপ দেওয়া এবং হুমকির কথা উল্লেখ ছিল। এমনকি এক সাংসদও তাকে হুমকি দিয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সাব-ইন্সপেক্টর গোপাল বাদানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে তাকে এখনও ধরতে পারা যায়নি। তরুণীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাটি মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন, মহিলাদের ওপর অপরাধের সংখ্যা বর্তমান সরকারের আমলে বেড়েছে। ক্ষমতাসীন সরকার জানিয়েছে, অভিযুক্তকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
সাতারার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বৈশালী কাদুস্কার এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘যদি সময়মতো সাহায্য করা হতো… বা তিনি কারও সঙ্গে তার ওপর চলা অত্যাচারের কথা শেয়ার করতেন, হয়তো তার জীবন বাঁচানো যেত। একজন নারী পুলিশ অফিসার হিসেবে এই ঘটনা আমাকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে।’
মন্তব্য করুন