কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৪, ১১:০২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবিলায় জন্ম নিচ্ছে ‘শয়তানের অক্ষশক্তি’

ত্রিদেশীয় অক্ষশক্তির শীর্ষ নেতারা। ছবি : সংগৃহীত
ত্রিদেশীয় অক্ষশক্তির শীর্ষ নেতারা। ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী সব দেশের মাথার ওপর ছড়ি ঘোরানোর মাধ্যমে আজ্ঞাবহ কিছু মিত্র পাওয়ার পাশাপাশি বেশকিছু শত্রুও তৈরি করেছে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সুপার পাওয়ার আমেরিকা। নিজ স্বার্থের বিরুদ্ধে পান থেকে চুন খসলেই শত্রুদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার যে ব্যবসা খুলে বসেছে ওয়াশিংটন, ভয় তৈরির পরিবর্তে সেই ব্যবসাই এখন বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে আমেরিকার জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের চোখের সামনেই ওয়াশিংটনকে মোকাবিলায় একটি ত্রিদেশীয় অক্ষশক্তির জন্ম দিচ্ছে চীন, রাশিয়া ও ইরান। ত্রিদেশীয় এই সহযোগিতাকে অনেক মার্কিন বিশ্লেষক বর্ণনা করছেন শয়তানের অক্ষশক্তি হিসেবে।

ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে বন্ধুত্বের শুরুটা হয়েছিল ২০১৫ সালে। সে সময় সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকারকে রক্ষা করতে গিয়ে এই দুই দেশের মধ্যে সর্বপ্রথম সখ্যতা তৈরি হয়। এরপর ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিস্ময়কর পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে মস্কো ও তেহরানের বন্ধুত্ব। যদিও আদর্শগত দিক থেকে বিবেচনা করলে ইরান-রাশিয়ার মধ্যকার পার্থক্যটা দৃষ্টিকটুভাবে চোখে পড়ার মতো। কারণ রাশিয়া যেখানে কমিউনিজমের চর্চা করে, সেখানে ইরান একটি ইসলামি মৌলবাদী দেশ।

ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার জেরে ইরান-রাশিয়ার আদর্শগত পার্থক্য ঘুঁচে গিয়ে দেশ দুটি এখন ঘনিষ্ঠ কৌশলগত মিত্র। অর্থনীতি, কূটনীতি ছাপিয়ে এখন রাশিয়া-ইরান সম্পর্কের প্রধান ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে সামরিক সহযোগিতা। ২০২২ সালেই রাশিয়াকে সামরিক ড্রোন দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে ইরান। আর রাশিয়াই প্রথম কোনো অমুসলিম দেশ, যারা ইরানের কাছ থেকে অস্ত্র পাচ্ছে।

সম্প্রতি মস্কো ও তেহরানের সঙ্গে চোখে পড়ার মতো জোট পাকানো শুরু করেছে বেইজিং। রাশিয়ার সঙ্গে তো আগে থেকেই সখ্যতা ছিল, গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি অগ্রাহ্য করে প্রকাশ্যে ও গোপনে দুই হাতে ইরানের জ্বালানি তেল কিনেছে চীন। ২০২১ সালে কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তিও করেছে এই দুই দেশ। এর পাশাপাশি ইরানের সঙ্গে এই সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও পোক্ত হবে বলে নিশ্চিত করেছে বেইজিং।

সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো- বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ইস্যুতে এখন একসুরেই কথা বলছে এই তিন দেশ, সমর্থন করছে একে অন্যকে। গেল ১৩ এপ্রিল রাতে ইসরায়েলে ইরানের নজিরবিহীন হামলার পর ইরানকে নিঃসার্থভাবে সমর্থন করেছে চীন। বাদ যায়নি রাশিয়াও। তেহরানের আত্মরক্ষার জন্য সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল মস্কোর পক্ষ থেকে।

বিশ্লেষকরা বলছেন চীন, রাশিয়া ও ইরানের মধ্যকার এই দহরম মহরম যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্র শিবির, বিশেষ করে ইসরায়েলের জন্য অবশ্যই একটি অশনিসংকেত। এই ত্রি-শক্তির শক্তি এবং আকৃতি যদি বাড়ে এবং তাদের মধ্যে সমন্বয় যদি আরও পোক্ত হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবেই বিশ্বব্যবস্থার একচেটিয়া প্রাধান্য ধরে রাখতে কঠিন সমস্যায় পড়বে আমেরিকা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চেম্বার জজ আদালতের রায়ের বিষয়ে শিশির মনিরের প্রতিক্রিয়া

ডা. মুরাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

মেসি শেষ কবে ফাইনাল হেরেছিলেন?

শেষ ম্যাচেও হার, এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গেল বাংলাদেশ

পবিপ্রবির ১৪ কর্মকর্তার নিয়োগে অনিয়ম তদন্তে দুদক

ফেনীতে দাবদাহে পুড়ছে জনপদ, জনজীবনে স্থবিরতা

অবরোধে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেল চলাচল বন্ধ

৯ তারিখেই ডাকসু নির্বাচন চান ভিপি প্রার্থী শামিম

৩০ জুলাইয়ের ভাঙা কাচের ছবি নিয়ে বামজোট প্রার্থীর ব্যাখ্যা

আফগানিস্তানে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত একটি গ্রাম, নিহত ছাড়াল ৮০০

১০

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত

১১

দুই ম্যাচ খেলেই চাকরি গেল সাবেক ম্যানইউ কোচের

১২

চবিতে সংঘর্ষ : হাসপাতালে ভর্তি ১২ শিক্ষার্থী, দুজন লাইফ সাপোর্টে

১৩

ডাকসু নির্বাচন স্থগিত করে যে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট

১৪

স্কুলের সামনেই প্রাণ গেল শিক্ষার্থীর, মিষ্টি খাওয়ায় ব্যস্ত শিক্ষকরা

১৫

ডাকসু স্থগিতের প্রতিবাদে শহীদুল্লাহ হল থেকে শিক্ষার্থীদের মিছিল

১৬

ডাকসু নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে কী হবে জানালেন শিশির মনির

১৭

মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বাংলাদেশির মৃত্যু

১৮

দুধ দিয়ে গোসল করে জুয়া খেলা ছাড়লেন যুবক

১৯

শিশুদের জন্য লবণ কতটুকু প্রয়োজন, যা বলছেন পুষ্টিবিদ

২০
X