ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় অগ্রাধিকার দিয়ে মশার লার্ভা ধ্বংসকারী বিটিআই প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বুধবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর মিরপুর জাফনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযানকালে তিনি এ কথা জানান।
ডিএনসিসি মেয়র মিরপুর জাফনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতামূলক কার্টুন বই বিতরণ করেন। পরে তিনি মিরপুর সিদ্ধান্ত স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝেও বইটি বিতরণ করেন। দুটি স্কুলের প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে বইটি বিতরণ করা হয়।
আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি আমাদের শিশুদের ডেঙ্গু থেকে মুক্ত রাখতে প্রতিনিয়ত স্কুলে স্কুলে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলছি। এডিস মশার কামড় থেকে বাঁচতে সবার সম্মিলিত সহযোগিতা চাই। বিশেষ করে অভিভাবক ও শিক্ষকদের সহযোগিতা চাই। আমার কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়েছি প্রতি শনিবার ও বুধবার নিজ নিজ এলাকার ইমাম, খতিব, শিক্ষক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে সভা করতে। সবাইকে সম্পৃক্ত করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, পৃথিবীতে অনেক হিংস্র প্রাণী রয়েছে। কিন্তু মশা পুরো বিশ্বে আরও বেশি হিংস্র হয়ে গেছে। প্রতিদিন মশার কামড়ে অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে। অতএব এ মশার কামড় থেকে বাঁচতে আমাদের সচেতন হতে হবে। সবাই মিলে চেষ্টা করলে মশা থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারবো, শহরকে নিরাপদ রাখা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন : মশা মারতে ১২২ কোটি টাকা খরচ করবে ডিএনসিসি
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মশার কামড় থেকে বাঁচতে তোমরা ফুল হাতা জামা পরবা, মশারির ভেতরে ঘুমাবা। বাবা, মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদি, নানা-নানিসহ আত্মীয় স্বজন এবং পাড়া প্রতিবেশীদের জানাবে কোথাও যেন পানি জমে না থাকে। বাসাবাড়ি, বারান্দা, ছাদ সবজায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
এ সময় ডিএনসিসি মেয়র ট্রাকে উঠে এডিস মশার উৎসস্থল-পরিত্যক্ত পাত্র, ডাবের খোসা, মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট, চিপসের প্যাকেট, অব্যবহৃত কমোড এগুলো দেখিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সচেতন করেন। শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা মেয়রের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিন দিনে একদিন জমা পানি ফেলে দেওয়ার ও প্রতি শনিবার সকাল ১০টায় ১০ মিনিটে বাসা-বাড়ি পরিষ্কার করার অঙ্গীকার করেন।
স্কুলে প্রচারাভিযান ও অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে ডিএনসিসি মেয়র ঘুরে ঘুরে জনগণের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রচারাভিযান শেষ করে ডিএনসিসি মেয়র কল্যাণপুরে রিটেনশন পণ্ডের উদ্ধার করা জমি পরিদর্শন করেন।
এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মেয়র বলেন, এখানে দীর্ঘ ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অবৈধ দখল ছিল। আমরা অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে অনেকাংশ উদ্ধার করেছি। বাকি সব অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে হাইড্রো ইকোপার্ক নির্মাণ করব। এখানে ইকোপার্কের পাশাপাশি বৃক্ষ হাসপাতাল ও প্রাণী হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। দ্রুতই কার্যক্রম শুরু হবে।
প্রচারাভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম শফিকুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহম্মদ আমিরুল ইসলাম, উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমদাদুল হক, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী, ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুজিব সরোয়ার মাসুম ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানা ইতি প্রমুখ।
মন্তব্য করুন