চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, নগর সরকারের অভাবেই চট্টগ্রামের মতো শহরে উন্নয়ন কার্যক্রমে সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। এখন সময় এসেছে একটি সুসংগঠিত ‘নগর সরকার’ প্রতিষ্ঠার। নগর সরকার প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ এলাকার বক্স কালভার্ট পরিষ্কার কার্যক্রম ও ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের ভেতরে নাসির খাল ও ছড়ার পানি চলাচলের অবস্থা পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
মেয়র বলেন, পৃথিবীর বহু শহরে নগর সরকার রয়েছে, যেখানে মেয়র হচ্ছেন সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। অথচ আমাদের এখানে সিটি করপোরেশন, সিডিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, নৌবাহিনী, বিদ্যুৎ বিভাগ, ওয়াসা—সব প্রতিষ্ঠান আলাদা আলাদা কাজ করছে। সমন্বয়হীনতার কারণে উন্নয়নের সুফল পুরোপুরি পাওয়া যাচ্ছে না।
এ সময় তিনি জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান আগ্রাবাদ বক্স কালভার্ট পরিষ্কারের কাজ আগামী দুই মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
পরিদর্শনকালে স্থানীয়দের অভিযোগে মেয়র নগরের টাইগারপাস, দেওয়ানহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় কিছু নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নালা-খাল ভরাট ও নির্মাণসামগ্রী উন্মুক্তভাবে ফেলে রাখার অভিযোগের সত্যতা পান। তিনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করে বলেন, পরিবেশবিরোধী কাজ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেয়র বলেন, শুধু খাল পরিষ্কার করলেই হবে না, নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে। নাগরিক দায়িত্ব ছাড়া কোনো পরিকল্পনাই সফল হবে না। আমি নিজের চোখে বদ্দারহাটে একটি বাসা থেকে খালে ময়লা ফেলার দৃশ্য দেখেছি। তাই ‘ডোর টু ডোর’ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৬ সালে যে ৩৬টি খাল সংস্কারের প্রকল্প নিয়েছিল, তার মধ্যে ২১টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকিগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য কাজ চলছে।
মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা ও ডেঙ্গু—দুই সমস্যাই একসঙ্গে বেড়ে চলছে। খুব সামান্য জমা পানিতেও এডিস মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে। প্লাস্টিক, ডাবের খোসা, বোতল ইত্যাদি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখার কারণে সমস্যা আরও বাড়ছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে—এই বিশ্বাস নিয়ে আমরা কাজ করছি। কিন্তু সবার আগে দরকার পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনা। আর তা সম্ভব হবে নগর সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফরহাদুল আলম, আগ্রাবাদ বক্স কালভার্ট খনন প্রকল্প পরিচালক কমান্ডার মো. এনামুল ইসলাম, সাবেক কাউন্সিলর নিয়াজ মোহাম্মদ খান, নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার জাহান, সহকারী প্রকৌশলী গাজী মো. কামরুল হাসান প্রমুখ।
মন্তব্য করুন