শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৪ পিএম
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘একটি হুইল চেয়ার পেলে স্কুলে যেতে পারতাম’

বাঁ থেকে- বর্ষণ, প্রতিবন্ধী এতিম শিশু রনি মুরমু ও তার নানি সনতি মুরমু। ছবি : কালবেলা
বাঁ থেকে- বর্ষণ, প্রতিবন্ধী এতিম শিশু রনি মুরমু ও তার নানি সনতি মুরমু। ছবি : কালবেলা

নওগাঁর সাপাহার উপজেলার আদিবাসী পল্লি লক্ষ্মীপুর দিঘীপাড়া গ্রামের ৯ বছরের প্রতিবন্ধী এতিম শিশু রনি মুরমু। জন্ম হতে প্রতিবন্ধী হয়ে পঙ্গু জীবনযাপন করছে সে।

প্রতিবন্ধী রনির নানি সনতি মুরমু (৬২) বলেন, আমার মেয়ে মেনতা হেমরম (৩৫) যখন ৭ মাসের গর্ভবতী তখন সংসারে খুব অভাব, ঘরে খাবার নেই, ওষুধ নেই এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই গন্ডগোল হতো, সে সময় আমার মেয়ে রাগ করে স্বামীর বাড়ি বিন্নাকুড়ি থেকে বের হয়ে অন্যত্র চলে যায়। সন্তান জন্মের ২ বছর পরে প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে আমার মেয়ে তার স্বামীর বাড়ি বিন্নাকুড়ি যায়। সেখানে গিয়ে দেখে তার স্বামী কার্ত্তিক মুরমু আর বেঁচে নেই। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ওই বাড়ি থেকে তাদের বের করে দেয়।

তিনি আরও বলেন, তখন তাদের স্থান হয় আমার বাড়ি লক্ষ্মীপুর দিঘীপাড়া গ্রামে। এর পরে আমার মেয়ে তার সন্তান রনিকে আমার বাড়িতে রেখে কাউকে কিছু না বলে চলে যায়। পরে জানতে পারি, সে ভারতে চলে গেছে। বাবা-মায়ের এনআইডি কার্ড না থাকায় তার প্রতিবন্ধী কার্ডও করতে পারিনি। রনির বাবার বাড়িতে আইডি কার্ড আনতে গেলে তারা কার্ড না দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। তার কার্ডটাও আর করা হলো না। এমনই জীবন আমাদের। তাই বাবা-মা হারা প্রতিবন্ধী এতিম ছেলেটাকে নিয়ে ভিক্ষায় বের হইছি। রনি হাঁটতেও পারে না। তাকে নিয়ে বেড়াতে অনেক কষ্ট হয় আমার। আমার স্বামীও বেঁচে নেই, ২০ বছর আগে মারা গেছে। অভাবী সংসার আমার।

প্রতিবন্ধী রনির চলার পথে সাহায্য করা পিসির ছেলে বর্ষণ (১০) বলে, রনি নিজে হাঁটা-চলা করতে না পারার কারণে কাঠের বাতা দিয়ে ফ্রেম তৈরি করে তিনটি বিয়ারিং লাগিয়ে একটি গাড়ি তৈরি করেছি। রনিকে ওখানে বসিয়ে পেছন থেকে আমি ঠেলা দিয়ে এখানে-সেখানে ভিক্ষা করতে নিয়ে যাই। বাড়ি থেকে বাজার প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা ঠেলে ওকে আনতে আমার খুব কষ্ট হয়। একটি হুইল চেয়ার হলে ভালো হয়। প্রতিবন্ধী রনি মুরমু ভাঙা ভাঙা গলায় বলে, আমি হাঁটতে পারি না, তাই স্কুলেও যেতে পারি না। আমি পড়ালেখা করতে চাই। একটা হুইল চেয়ার পেলে আমি স্কুলে যেতে পারব। সে আরও জানায়, আমরা গরিব মানুষ, অনেক কষ্ট করে চলি। তাই সরকার ও সমাজের বৃত্তবান মানুষের কাছে রনির আবদার একটি হুইল চেয়ার ও প্রতিবন্ধী কার্ড। এগুলো পেলে সে স্কুলে ঠিকমতো যেতে পারবে।

এ বিষয়ে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি একটা ট্রেনিংয়ে রাজশাহীতে আছি। সামনের সপ্তাহে ছেলেটিকে আমার অফিসে আসতে বলেন, আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাম্য হত্যার প্রতিবাদে বরিশালে ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি

একসঙ্গে সমাবর্তন নিলেন একই পরিবারের পাঁচজন

আইন অমান্য করে পুকুর ভরাট, ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

৩৪তম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা ২৩ মে

আমার মাধ্যমে কোনো অন্যায় পলে আটকায় দিও : ববি উপাচার্য

কবরস্থান কমিটি নিয়ে যুবদল-শ্রমিক দল নেতার দ্বন্দ্ব, অতঃপর...

মোহাম্মদপুরে একই পরিবারের ৭ জনকে কুপিয়ে জখম

গরু নিয়ে যাওয়া সেই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা বহিষ্কার

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির সিএসই ডিপার্টমেন্টের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের অবমাননাকর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ হেফাজতে ইসলামের

১০

বিএনপি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায় : আমিনুল হক 

১১

রোহিতকে কোহলির চেয়ে এগিয়ে রাখলেন প্রোটিয়া কিংবদন্তি

১২

দুঃখ প্রকাশ করে যা বললেন তথ্য উপদেষ্টা

১৩

‘শিবিরের নামে ভুয়া আইডি খুলে চক্রান্ত হচ্ছে’

১৪

মাদারীপুরে বজ্রপাতে প্রাণ গেল দুই শ্রমিকের

১৫

আবদুল হামিদের বিদেশে অবস্থান নিয়ে ছেলের ফেসবুকে স্ট্যাটাস

১৬

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের জন্য দল ঘোষণা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার

১৭

সোনার দামে বড় পতন, ভরি কত?

১৮

চিকেনস নেকের কাছে ভারতের সামরিক মহড়া ‘তিস্তা প্রহার’

১৯

ফের আন্দোলনের ঘোষণা কুয়েট শিক্ষার্থীদের

২০
X