মাগুরার মোহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের মধুমতি নদীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ ও গ্রামীণ মেলা। সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে মধুমতি নদীর ঝামা ঘাটে এ নৌকা বাইচ ও গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রায় একশ বিশ বছর ধরে প্রতিবছর দুর্গাপূজার বিসর্জনের পরদিন এ ঘাটে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী এ গ্রামীণ উৎসব।
নৌকার বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দের পাশাপাশি বাইচালদের ‘হেইওরে, হেইওরে’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছিল মধুমতি নদী। শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষ এই বাইচ উপভোগ করতে উপস্থিত হয়ে মেতে ওঠে আনন্দ-উল্লাসে। দুপুর হতে না হতেই নৌকা বাইচ ও গ্রামীণ মেলা উপলক্ষে হাজারো মানুষের সমাগম ঘটতে থাকে মধুমতি নদীর ঝামা বাজার এলাকায়। মধুমতি নদীর দুই তীরে তখন হাজারো মানুষের মিলন মেলা।
মেলা উপলক্ষে সুদৃশ্য তোরণ, মাছ-মাংসের দোকান থেকে শুরু করে মিষ্টি, চানাচুর, পারিবারিক গ্রামীণ পণ্যের সমাহার, শিশুদের মাটির খেলনা, মেয়েদের প্রসাধনী, নাগরদোলাসহ নানা রকম অনুষঙ্গ। শতবর্ষী এ মেলাকে কেন্দ্র করে কেনাবেচায় মুখর হয় পুরো এলাকা। তবে প্রতি বছরেই এ মেলাকে ঘিরে ক্রেতা-বিক্রেতার লেনদেনে এলাকার ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটে। মেলায় আসতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন সব শ্রেণির মানুষ।
এবছর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মেলা আয়োজন কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ার পরও স্থানীয়দের উদ্যোগে ও রাজনৈতিক নেতাদের সদিচ্ছার কারণে মেলা জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এ মেলা এ এলাকার অসাম্প্রদায়িক চেতনার একটি চমৎকার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে এটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন স্থানীয় আয়োজকরা। জরুরি রাজনৈতিক কারণে প্রধান অতিথি বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ মোহাম্মদপুরের সন্তান রবিউল ইসলাম নয়ন সশরীরে উপস্থিত না থাকতে পারলেও মেলা সফল করতে তিনি ভূমিকা রাখেন বলে জানান তারা।
এ ধরনের গ্রামীণ মেলার ঐতিহ্য লালনের মাধ্যমে গ্রাম বাংলার চিরায়ত সমৃদ্ধির পথ অটুট থাকবে এমনটি আশা করেন এলাকাবাসি।
মন্তব্য করুন